১১ বছরেও কমিটি পেলো না বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ
১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন। সংগঠনটির গতিশীলতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়েই সংগঠনটির কমিটি রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বঞ্চিত বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই সক্রিয়ভাবে রাজনীতি শুরু করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ছাত্রলীগ কর্মীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো শিক্ষার্থীর সমস্যা সমাধানে, আর্থিক সহযোগিতা প্রদানে এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের প্রতিটি আন্দোলন কর্মসূচিতেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে দেখা গিয়েছে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থাকা এসকল শিক্ষার্থীদের। পাশাপাশি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে ঘোষিত সকল কর্মসূচিই যথাযথভাবে পালন করেন তারা। তবে এতকিছুর পরেও দীর্ঘ ১১ বছরে ছাত্রলীগের এই ইউনিটটির মেলেনি কোনো সাংগঠনিক স্বীকৃতি।
আরও পড়ুন: গেস্টরুম-গণরুমে নির্যাতনের ভয়, ঢাবি ছেড়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ছাত্র রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা বেশ কয়েকটি সংগঠন ইতোমধ্যে বশেমুরবিপ্রবিতে সাংগঠনিক কমিটি ঘোষণা করেছে। এসকল সংগঠনের মধ্যে রয়েছে- ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রন্ট, ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন এবং বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ। এদের মধ্যে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ গত ১৩ মার্চ কমিটি ঘোষণা করে। এমন পরিস্থিতে সকলের মাঝেই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে কেনো ছাত্রলীগের বশেমুরবিপ্রবিতে কমিটি দেয়া হচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকা প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এর আগে ২০১৬ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে সাংগঠনিক ভাবে গতিশীল করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ কর্তৃক প্রেরিত প্রতিনিধি দলের নিকট আগ্রহী প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। ওই সময়ে সকলে কিছুটা আশার আলো দেখলেও শেষপর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ কমিটি।
এমনকি এর পরবর্তী সময়েও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ একাধিকবার আশ্বাস দিলেও কমিটির ব্যাপারে কোনো সুরাহা হয়নি। ফলাফল স্বরূপ কমিটির আশায় দিন গুনে কেউ কেউ রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন, কেউবা ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমনকি একসময়ে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকা অনেকেই হতাশা নিয়ে প্রবেশ করেছেন কর্মজীবনে। তবে এত হতাশার ভিড়ে এখনো কেউ কেউ প্রত্যাশা রাখছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি হবে।
দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে ছাত্রলীগ কর্মী জাহাঙ্গীর আলম, শেখ তারেক, বাবুল সিকদার বাবু, ফাহাদ সার্জিল ও রাশা সিকদার বলেন, জাতির পিতার পূন্যভূমিতে তারই নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২ সালে থেকে জাতির পিতার আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে কিছু মুজিব সৈনিকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ছাত্রলীগের পথচলা শুরু হলেও সাংগঠনিকভাবে এখনো কমিটিহীন। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় অনেক কর্মীরাই হতাশ হয়ে পরছে আর এই সুযোগে স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে বাঁচাতে এবং সকল অপশক্তিকে রুখে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: একই প্যাকেজ আবার কিনলে অব্যবহৃত ডাটা ফেরত পাওয়া যাবে
এসময়ে তারা, দ্রুত কমিটি প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা,গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাছে অনুরোধ জানান।
এদিকে কমিটির বিষয়ে, ২০২১ এর অক্টোবরে বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রলীগ ইউনিটের সাংগঠনিক দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের দুই সদস্যের একজন সহ-সম্পাদক শরীফ হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ,কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন জেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি দিচ্ছেন। পর্যায়ক্রমে সকল কমিটি হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,গোপালগঞ্জ শাখার কমিটি দ্রুত দেওয়ার বিষয়টি তাদের মাথায় আছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুইজন ঢাকার বাহিরে আছেন তারা আসলে আমরা দায়িত্ব প্রাপ্ত দুইজন কমিটির বিষয়ে কথা বলবো।’