শাবিপ্রবি উপাচার্য নিজ কার্যালয়ে গেলেন ২৫ দিন পর
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অ্যধাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ প্রশাসনিক ভবনের নিজ কার্যালয়ে ২৫ দিন পর আসলেন। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে বসতে কার্যালয়ে আসেন তিনি।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ গিয়ে উপাচার্যকে বের করে আনেন। এর পর আর কার্যালয়ে আসেননি উপাচার্য।
আরও পড়ুন: ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের কর্মীদের বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ
এর আগে সিলেট সার্কিট হাউজে বিকেল ৩ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে আসেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও ইউজিসির সচিব ফেরদৌস আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরের পাশে বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি প্রশাসনিক ভবনে যান। এ সময় উপাচার্য অ্যধাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদও আসেন।
জানা যায়, বাসায় থেকেই অফিস করছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। আন্দোলন বন্ধের পর গত ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস খোলা হলেও নিজ কার্যালয়ে আসেননি তিনি। এমনকি আন্দোলনের পর ১৬ জানুয়ারি থেকে এখনো বাসা থেকে বের হননি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ। বাসা থেকেই পরিচালনা করছেন অফিস কার্যক্রম।
সংঘর্ষ, মিছিল, বিক্ষোভ আর উত্তেজনায় ক্যাম্পাস উত্তাল ছিল ১৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। অনশন ভাঙার পর থেকে বদলে গেছে ক্যাম্পাসের চিত্র। কমেছে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। টানা ১৪ দিনের আন্দোলন-ঝড় শেষে শান্ত হয়েছে শাবিপ্রবি। তবে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ক্যাম্পাস ত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আলপনা, ক্যাম্পাস পরিষ্কার, চাষাভুষার টং স্থাপন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন তারা।
অনশন ভাঙ্গার পর গুঞ্জন উঠেছিলো এক সপ্তাহের মধ্য প্রজ্ঞাপন জারি করে শাবিপ্রবিতে নতুন উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে। শাবিপ্রবি থেকেই কোনো শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে। বেশ কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে বলেও শুনা গিয়েছিলো। কিন্তু সপ্তাহ গড়ালেও উপাচার্যকে অপসারনের কোন উদ্যোগ এখনও চোখে পড়েনি। বরং বহাল তবিয়তে বাসা থেকেই অফিস করছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ।
আরও পড়ুন: ২২ ফেব্রুয়ারি কি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে?
এর আগে ১৩ জানুয়ারি রাতে সিরাজুন্নেসা হলের প্রভোস্ট বডির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ছাত্রীরা। পরের দিন দাবি মেনে নেয়ার কথা দিলেও তা পূরণ করেননি ভিসি অধ্যাপক ফরিদ। দাবি পূরণে সময় চাওয়ায় আন্দোলন চালিয়ে যায় ছাত্রীরা। পরে তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যুক্ত হন ছাত্ররাও। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ হামলা চালালে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। পরেরদিন ভিসিকে আইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করে রাখে আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তালা ভেঙে ভিসিকে উদ্ধার করে। এসময় পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট, টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। এতে প্রায় অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর ভিসি পদত্যাগে সময় বেধে দিয়ে গণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা। ১৬৩ ঘণ্টা অনশন করার পর বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবালের আশ্বাসে অনশন ভাঙেন তারা।