২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১৯:২৮

পাবিপ্রবিতে নিয়োগে অনিয়ম, ভিসির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেল করছেন গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ  © টিডিসি ফটো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) উপাচার্যের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগে অস্বচ্ছতা, অনিয়ম ও গণিত বিভাগের চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীরা।

আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) পাবনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব অভিযোগ করেন গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হারুনুর রশিদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রস্তম আলির বিরুদ্ধে নিয়োগ পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ এনে পরীক্ষা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ২ মার্চ পর্যন্ত বাড়ল ৪৪তম বিসিএসের আবেদন, প্রিলি আগের তারিখেই

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ বলেন, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত বিভাগে ২ জন শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমাকে সদস্য হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত হতে গেলে ভাইস চ্যান্সেলরের ইশারায় তার পেটুয়া কর্মকর্তা ও কর্মচারী বাহিনী আমাকে নিয়োগ বোর্ডের কক্ষে প্রবেশে বাঁধা প্রদান করেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে ওই বিল্ডিং থেকে বের করে দেয়া হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এম রস্তম আলির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ড. হারুনের স্ত্রী নিয়োগ পরীক্ষায় একজন প্রার্থী। তাই তাকে নিয়োগ পরীক্ষায় উপস্থিত না থাকতে বলা হয়েছিল। রেজিস্টার অফিস থেকে তাকে ফোন করা হয়েছিল এবং আমি নিজেও ড. হারুনকে বলেছিলাম। নিয়োগ পরীক্ষার স্বচ্ছতার স্বার্থেই তাকে নিয়োগ বোর্ডে থাকতে দেওয়া হয়নি।

ভিসির পছন্দের প্রার্থী নিয়োগ করতেই এমন আয়োজন উল্লেখ করে ড. হারুন বলেন, আমার স্ত্রী নিয়োগ পরীক্ষার প্রার্থী হওয়ায় গত ২৫ জানুয়ারি আমি লিখিতভাবে পরীক্ষায় প্রশ্ন করা ও খাতা মূল্যায়নের কাজ থেকে বিরত থাকার বিষয়টি জানাই। আমার কোনো নিকট আত্মীয় ভাইভা বোর্ডে গেলে প্রয়োজনে আমি সেখানে উপস্থিত থাকবো না বলে জানিয়েছি। নিয়োগ বোর্ড থেকে বাদ দেওয়ার বিষয়ে আমাকে কোনো চিঠি না দিয়ে মৌখিকভাবে আমাকে জানানো হয়েছে। উপাচার্যের পছন্দের লোককে নিয়োগ দিকে এই নাটক সাজানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন: সিঙ্গাপুরে ফুল ফ্রি স্কলারশিপ, সঙ্গে মাসিক ২ লাখ টাকা উপবৃত্তি

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে সেকশন অফিসার পদে পরীক্ষা দেওয়া আতিকুল ইসলাম নামে এক চাকরি প্রার্থী জানান, গত বছরের ১৬ জুন নিয়োগ বোর্ডে মেধা যাচাই ও যোগ্যতা সম্পন্ন প্রার্থীদের না নিয়ে নিয়োগ বোর্ডের সভাপতির দায়িত্বে থেকে ভিসি স্যার তার আপন ভাতিজী কানিজ ফাতেমাকে প্রথম শ্রেণির সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দিয়েছেন। একই পদে আরও চারজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে শুধুমাত্র অর্থের বিনিময়ে। অথচ লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের নামে নাটক সাজিয়ে সেই পরীক্ষার কোন রোস্টার টাঙানো হয়নি।

ভিসির ভাইজিকে চাকরি দিতে যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করে এ ব্যাপারে উপাচার্য বলেন, নিয়ম মেনেই আমার ভাইজিকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। চাকরি না পেয়ে এখন তারা এসব অভিযোগ করছে।

স্বচ্ছ ও নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সকল নিয়োগ সম্পন্ন হচ্ছে বলে ভিসি দাবি করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সুত্র জানিয়েছেন, বর্তমান ভিসির নিয়োগের সময়সীমার প্রায় শেষ মুহূর্তে বিভিন্ন পদে তিনি নিজের পছন্দের লোকজনকে নিয়োগ করতে গিয়ে নানা অনিয়ম করছেন।