কুয়েটের অধ্যাপক সেলিমের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে
ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রয়াত অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে নিজ বাড়ির কবরস্থান থেকে তাকে দাফন করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মরদেহ উত্তোলনের জন্য যাচ্ছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উত্তোলন করা হবে। আগামীকাল বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আবার দাফন করা হবে।
আরও পড়ুন: ছাত্রলীগের সঙ্গে বৈঠকের পর হার্ট অ্যাটাকে কুয়েট অধ্যাপকের মৃত্যু
গত ৩০ নভেম্ব বেলা ৩টায় মারা যান অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) পদে নিজের লোককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ঘটনার দিন দাপ্তরিক কক্ষে সাদমান নাহিয়ান ও তার অনুগতদের অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন ড. সেলিম।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন সাদমান নাহিয়ান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রায় আধঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য বাসায় যান। দুপুর ২টার দিকে স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কুয়েট শিক্ষকের মৃত্যু: ‘জোর করে ছাত্ররা তাকে অফিসে নিয়ে যায়’
এ ঘটনায় কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের নামে জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুয়েট প্রশাসন। আর দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ ৫ দফা দাবিতে ২ ডিসেম্বর দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। পাশপাশি প্রতিবাদ সমাবেশ করে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।
আরও পড়ুন: শোকসভায় কাঁদলেন অধ্যাপক সেলিমের স্ত্রী, চাইলেন নিরাপত্তা
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ ডিসেম্বর সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধসহ বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর ৭টি আবাসিক হলে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী হল ছাড়েন।
আর ড. সেলিম হোসেনের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যুর ঘটনায় ৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।