বুয়েটে কমিটি করেছে ছাত্রদল, ভাঙেনি ছাত্রলীগ
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর ক্যাম্পাসে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করে বুয়েট প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞার পরও বুয়েটে নতুন কমিটি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের আগের কমিটিও বহাল রয়েছে। এ
শুধু ছাত্রলীগ ছাত্রদলই নয়; বুয়েট ক্যাম্পাসে বাম হিসেবে পরিচিত একাধিক ছাত্র সংগঠনের কমিটিও রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট অন্যতম। এছাড়া বুয়েটে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কমিটিও সক্রিয় রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বুয়েট কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ রয়েছে। গুটি কয়েক শিক্ষার্থী বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকলেও তারা গোপনে তাদের কার্যক্রম চালায়। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্যাতনে মৃত্যু হয় ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এরপর থেকেই শিক্ষার্থীরা বুয়েটে সব ধরনের ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি তোলেন। শিক্ষার্থীদের তুমুল আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়।
আরও পড়ুন: বুয়েটের সব শিক্ষার্থীকে স্মার্ট আইডি কার্ড দেয়া হবে
ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও ২০২০ সালের ২৪ জুলাই বুয়েটে কমিটি ঘোষণা করেছে ছাত্রদল। কমিটিতে আহবায়ক হিসেবে রয়েছেন আসিফ হোসেন। আর সদস্য সচিব করা হয়েছে ফয়সাল নূরকে। কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত অধিকাংশই বুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় গত বছর কমিটির বর্তমান ছাত্রদের নোটিশ পাঠায় বুয়েট। এর জবাবে তারা তখন জানিয়েছিল, তাদের অজান্তেই কমিটিতে নাম দেওয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২০২০ সালে বুয়েটে যখন কমিটি দেওয়া হয়েছিল তখন এ বিষয়ে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে বিবৃতি দিয়েছি। নতুন করে এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।
সেসময়ের কমিটি সম্পর্কে তখন ছাত্রদল জানিয়েছিল, ছাত্ররাজনীতি না থাকলে বুয়েটে ‘উগ্রবাদের’ উত্থান ঘটার আশঙ্কা রয়েছে৷ তাই বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত তারা মানে না৷
আরও পড়ুন: ‘মুরগির রক্ত দেখলে আঁতকে উঠতেন’ ইফতি!
এদিকে আবরার হত্যকাণ্ডের ঘটনায় তৎকালীন ছাত্রলীগের ১১ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তখন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল বুয়েটে ছাত্রলীগের কোনো কার্যক্রম নেই। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ওই কমিটি ভাঙেনি ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলছেন, ছাত্র রাজনীতির খারাপ দিকগুলো সংস্কার করার দাবি উঠতে পারে। তবে পুরোপুরি ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক।
আরও পড়ুন: র্যাংকিংয়ে ধারাবাহিকভাবে পেছাচ্ছে ঢাবি-বুয়েট
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার দ্যা ডেইলি ক্যম্পাসকে বলেন, ক্যাম্পাস যারা রাজনীতি করছে তারা আমাদের কাছে অনুমোদন নেয় না। আমাদের অনুমোদন নিতে আসলে তখন এই বিষয়ে একটা ব্যবস্থা নেওয়া যেত। কেউ গোপনে কার্যক্রম পরিচালনা করলে সে বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে।