নোবিপ্রবিসাস কার্যালয় ভাঙচুর, জড়িতদের শনাক্তে নেই তৎপরতা
- নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২০, ০৯:২৩ PM , আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২০, ১২:৩৮ AM
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (নোবিপ্রবিসাস) কার্যালয়ে ভাঙচুরের বিভিন্ন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের থেকে নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে জড়িতদের বিচারও দাবি করা হয়েছে। এদিকে, ঘটনার দু’দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে কোন তৎপরতা দেখা যায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।
গত বৃহস্পতিবার নোবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির দপ্তরে ভাঙচুরের ঘটনা জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ প্রশাসন এবং শিক্ষকদের সংগঠনসহ ক্যাম্পাস ও সারাদেশের প্রায় ৪০টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নিন্দা জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।
এই ঘটনায় নোবিপ্রবির ১৯টি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নিন্দা জানিয়েছে। সংগঠনগুলো হল- নোবিপ্রবি ডিবেটিং সোসাইটি, সায়েন্স ক্লাব, চলো পাল্টাই ফাউন্ডেশন, সমকাল সুহৃদ সমাবেশ, ছায়া জাতিসংঘ সংস্থা, শব্দকুটির, ফটোগ্রাফি ক্লাব, ক্যারিয়ার ক্লাব, পাঠশালা ও কনজুমার ইয়ুথ বাংলাদেশ।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য সংগঠনের মধ্যে নোবিপ্রবি থিয়েটার, লিও ক্লাব, নোবিপ্রবি বিজনেস ক্লাব, রয়্যাল ইকোনমিকস ক্লাব, ৬ষ্ঠ ইন্দ্রিয়, বিএলডব্লিওএস ক্যারিয়ার ক্লাব, এগ্রি ক্লাব, ফিমস ক্যারিয়ার ক্লাব, ইনডিজিনাস স্টুডেন্টস এসোসিয়েশন নিন্দা জানিয়ে বিচারের দাবী জানিয়েছে।
এদিকে, এ ঘটনাায় সারাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ সাংবাদিক সংগঠনসমূহ নিন্দা ও প্রতিবাদ লিপি দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে বিচারের জোর দাবি জানিয়েছে। সারাদেশের মোট ২১টি সাংবাদিক সংগঠন নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। এই সংগঠনসমূহের মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি নিন্দা জানিয়েছে।
এছাড়া অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজের মধ্যে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ঢাকা কলেজ সাংবাদিক সমিতি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, চুয়েট সাংবাদিক সমিতি ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।
আরো প্রতিবাদ জানিয়েছে, রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ সাংবাদিক সমিতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিক সমিতি ও ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় রিপোটার্স ইউনিটি।
সংগঠনগুলো বিবৃতিতে ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত বিচারের দাবি জানান। তারা বলেন, করোনার বন্ধে নোবিপ্রবি ক্যাম্পাসে এ জাতীয় ঘটনা নতুন নয়। আবাসিক হলসমূহে চুরি, বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফর্মার চুরি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ভাঙচুর ও মালহানির ঘটনা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিতই ঘটে।
তারা আরও বলেন, সিসি ক্যামেরা না থাকায় এসকল ঘটনার তদন্ত দূরূহ ব্যাপার হয়ে যায়। ফলে অপরাধীরা বারবার এসব নিন্দনীয় কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। দ্রুত সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে এসব সমস্যা দূরকরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আহবান জানায় নোবিপ্রবির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
নিন্দা প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দূর্বলতার বহিঃপ্রকাশ অথবা প্রশাসনের মৌন সম্মতিতে এই ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে আশংকা করছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সংগঠনগুলো। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, ভয়ভীতি প্রদর্শন করার মাধ্যমে গণমাধ্যমকে নিশ্চিহ্ন করার এ নীতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলবে। বিবৃতিতে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদের উপর হামলা, মামলা, হুমকি বন্ধ করে জাতীয় স্বার্থে সাংবাদিকতার পথকে সুগম করে দিতে সংশ্লিষ্ট সকলকে আহবান জানান তারা।
এছাড়াও নিন্দা ও প্রতিবাদলিপি দিয়ে বিচারের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহল থেকে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার নিন্দা জানান বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও সাংবাদিক সমিতির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ড. দিদার-উল-আলম। তিনি বলেন, এটা খুবই হীন মন মানসিকতার কাজ। এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। ব্যক্তি ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে আমি মনে করি।
তিনি বলেন, সাংবাদিক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা আইনুনাগ ব্যবস্থা নেবো।