বাড়ি ভাড়া নিয়ে সংকটে শিক্ষার্থীরা, আশ্বস্ত করলেন ভিসি ও জেলা প্রশাসক

নোবিপ্রবি
নোবিপ্রবি  © ফাইল ফটো

ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় দীর্ঘ তিন মাস ধরে মেসে থাকছেন না নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। যদিও না থাকলেও মেস মালিকদের চাপের মুখে অনেককেই মাসে মাসে ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে। যা নিয়ে রীতিমত হিমশিম খাচ্ছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে বারবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইলেও এক্ষেত্রে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও জেলা প্রশাসক— উভয়েই আশ্বাস দিয়ে বলছেন, পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে, সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই হলে সিট না পেয়ে বাধ্য হয়ে মেসে থাকতে হয়। যেহেতু তারা তিন মাস ধরে মেসে থাকছেন না, তাই তাদের দাবি, সম্পূর্ণ না হলেও অন্তত মূল ভাড়ার কিছু অংশ মওকুফের ব্যবস্থা করলে সহনীয় হত। এছাড়া ভাড়ার বিষয়ে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কিছু প্রণোদনা দিলেও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা চাপ মুক্ত হবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম সৌরভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন সংকটের কারণে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীকেই মেসভাড়া নিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু এখন প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় যারা টিউশনি করে খরচ বহন করতেন, তারা সব চেয়ে বেশি সমস্যায় ভুগছে। সৌরভ বলেন, অনেক মেস মালিকের উপার্জনের উপায় যেমন এই মেস ভাড়া তেমনি অনেক শিক্ষার্থীর মাথাব্যথার কারণও এই মেসভাড়া। তাই স্থানীয় প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উভয়পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে সুন্দর সমাধান দেওয়া সম্ভব।

বাড়ির মালিকরা বলছেন, তারা স্থানীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মধ্যস্থতায় এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান চান। উত্তর ফকিরপুর এলাকার এক বাড়ির মালিক মো. শফিকুল্লাহ বলেন, ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে গেছে। শিক্ষার্থীদের কাছে গত তিন মাসের ভাড়া বকেয়া রয়েছে। এজন্য আমাকেও অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। দ্রুত এটির সুষ্ঠু সমাধান হওয়া দরকার।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের এই সঙ্কটকালীন সমস্যার কথা আমরা অবশ্যই বিবেচনা করব। তবে এটি প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আমাদের উপযুক্ত সিদ্ধান্ত জানানো হোক। আমরা আংশিক ভাড়া মওকুফ করে বাকিটা আদায় করব।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন এবং সাংসদের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। এটি সমাধানের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এতদিনেও সমাধান না হওয়ার কারণ হিসেবে প্রক্টর জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কেউ নোয়াখালীতে না থাকায় সরাসরি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। যথাসম্ভব সমাধানের চেষ্টা করা হয়েছে। আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে এর বেশি কিছু করা সম্ভব নয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের সাথে ইতোপূর্বে এ বিষয়ে কথা বলা হয়েছে। আবারও যোগাযোগ করে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, করোনা পরীক্ষার ফলে ব্যয় অনেক বেড়েছে, বিধায় সকল শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে সম্ভব নয়। এ সময় তিনি শিক্ষর্থীদের সাহায্যের জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর নাম সংযুক্তিসহ একটি দরখাস্ত করতে বলেন।

সামগ্রিক বিষয় তুলে ধরে শুক্রবার বিকেলে নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে এ বিষয়ে পরবর্তীতে আবারও আলোচনা হবে। সে আলোকেই সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এ নিয়ে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি। 


সর্বশেষ সংবাদ