যুগলের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করায় ছাত্রকে র‌্যাগিং, অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা!

  © টিডিসি ফটো

ফেসবুকে প্রেমিক-প্রেমিকার ছবি পোস্ট করায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এক ছাত্রকে হেনেস্তা করেছেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে প্রেমিক-প্রেমিকাও ছিলেন বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে নীল দিঘী পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। 

পরে বিকালে ভুক্তভোগী ওই ছাত্র ঘুমের ঔষদ খেয়ে আত্মাহত্যার চেষ্টা করেন। বিষয়টি তার সহপাঠীরা জানতে পারলে অজ্ঞান অবস্থায় ওই ছাত্রকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিলে রাত ১১টার পর তার জ্ঞান ফিরে।

হেনেস্তার শিকার ওই ছাত্রের নাম সাব মিয়া সোহেল। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক একটি ফেসবুক গ্রুপে ফলিত গণিত বিভাগ ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সাকিবুল হাসান দূর্জয় ও ইনফরমেশন সায়েন্স এন্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী মারিয়াম সিদ্দিকা জেমির যুগল একটি ছবি পোস্ট করে। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সোহেলকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে নীল দিঘী পাড়ে আসতে বলে দুর্জয় ও তার সহপাঠীরা। এসময় জেমিও তাদের সঙ্গে ছিলেন বলে জানা গেছে।

এসময় সোহেল তার সেই পোস্টের জন্য দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও দূর্জয় ও তার সহপাঠী সোহান (সমাজকর্ম ২০১৮-১৯ বর্ষ), বাংলা বিভাগের তানভীর মাহতাব সামিসহ (বাংলা, ২০১৮-১৯ বর্ষ) ৮/১০ জন তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ঝিত করেন। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাকিব মোশাররফ ধ্রুব এর অনুসারী বলে জানা গেছে।

এসময় মারিয়াম সিদ্দিকা জেমি সোহেলকে কান ধরিয়ে হাঁটায় এবং চরমভাবে লাঞ্ছনা করে বলেও জানা যায়। যদিও জেমি সোহেলের ডিপার্টমেন্টের জুনিয়ার শিক্ষার্থী। এদিকে, এ ঘটনায় পরবর্তীতে মাইজদী বিশ্বনাথের মেসে গিয়ে সোহেল আত্মহত্যার চেষ্টা করলে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে সহপাঠীরা তাকে নোয়াখালী সদর হাসপাাতলে নিয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সোহেলের এক সহপাঠী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিভাগের জুনিয়র কর্তৃক এমন লাঞ্ছনার ঘটনা মেনে নেওয়া যায়না। আগামীকাল (বুধবার) আমরা সবাই ক্লাস বর্জন করে বিচারের দাবিতে আন্দোলনে যাব।

এ ব্যাপারে সাকিবুল হাসান দূর্জয় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ওরা কয়েকজনে মিলে ছবিগুলো ‍তুলেছিল। পরে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করে সোহেল। বিষয়টি ক্যাম্পাসের সবাই জেনে যায় এবং এমনকি জেমির পরিবারও জেনে যায়। ফলে জেমির পরিবারের পক্ষ থেকেও তার পড়ালেখা বন্ধের ‍হুমকি আসে এবং ক্যাম্পাসে সেটি একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় জেমি ভেঙ্গে পড়েছে।

তিনি বলেন, বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য সকাল ১১টায় কয়েকজন মিলে সোহেলের সাথে দেখা করেছি। এসময় তাকে কোন ধরণের মারধর কিংবা লাঞ্ছনা করা হয়নি বলে জানান দূর্জয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ