গ্যারেজে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন বশেমুরবিপ্রবি ছাত্রীরা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩৯ AM , আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩৯ AM
তীব্র আবাসন সংকটের কারণে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) প্রায় অর্ধশতাধিক ছাত্রীকে থাকতে হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্যারেজের একটি অংশে। প্রচন্ড গরমে টিনশেডের এই গ্যারেজে রীতিমতো মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে তাদেরকে।
জানা গেছে, শেখ রেহানা হলের নামে পরিচালিত এ হলটি তৈরি করা হয়েছে গ্যারেজের কিছু অংশ এবং নবনির্মিত টিনশেডের দুটি কক্ষের সমন্বয়ে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারীতে ছয়মাসের মধ্যে নির্মাণাধীন ৪০০ আসনের শেখ রেহানা হলে স্থানান্তর করার আশ্বাস দিয়ে এ হলটিতে তোলা হয় ছাত্রীদের। কিন্তু দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন তাদের কথা রাখেনি।
ছাত্রীদের দেয়া তথ্যানুযায়ী, এসকল কক্ষে একদিকে যেমন নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা অপরদিকে নেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থাও। প্রায়ই ঘটছে চুরির ঘটনা। এমনকি চোরের ছুরিকাঘাতে ছাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। তাছাড়া হলটির আশেপাশে প্রচুর ঝোপঝাড় থাকায় সাপসহ অন্যান্য পোকামাকড়ের উপদ্রব ও রয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী জানান, ‘আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় তা করছেনা। আমরা যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান, মেসে থাকার খরচ বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই এখানে বসবাসের কোনো পরিবেশ না থাকলেও থাকতে বাধ্য হচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের আবাসন সমস্যা সমাধানের তেমন কোনো উদ্যোগই নেই। ভর্তির পর থেকেই শুনছি ছয়মাসের মধ্যে হলের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। কিন্তু সেই নির্মাণকাজ আজও শেষ হয়নি। এখানে সাপ,পোকামাকড় ও চোরের উপদ্রবে সর্বদা আতঙ্কে থাকতে হয় কিন্তু এসব নিয়ে অভিযোগ করার ও সুযোগ নেই। এসব নিয়ে কোনো অভিযোগ করলে কিংবা প্রতিবাদ জানালেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও একাডেমিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি দেয়া হয়।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা এই অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের নূন্যতম যেটুকু সুযোগ সুবিধা পাওয়ার অধিকার রয়েছে আমরা সেটুকু পেতে চাইল।’
এদিকে আসন সংখ্যায় দেশের চতুর্থ বৃহত্তম এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ৪১নম্বর ধারায় ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয় বিধান দ্বারা নির্ধারিত স্থান ও শর্তাধীনে বসবাস করিবে’ এমন নিয়ম থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়টি তা মান্য করছেনা। আবাসন সুবিধা নিশ্চিত না করেই প্রায় প্রতিবছরই স্নাতক প্রথম বর্ষে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বশেমুরবিপ্রবিতে ১২ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত থাকলেও দুটি ছাত্র হল ও একটি ছাত্রী হলে মাত্র ৮০০ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া প্রায় চার বছরেও নির্মানকাজ সম্পন্ন হয়নি শেখ রাসেল হল এবং শেখ রেহানা হলের। টেন্ডার বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী হল দুটির নির্মানকাজ ২০১৭ এর জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিলো।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আশিকুজ্জামান ভুঁইয়া জানান, ‘আমরা কাউকে ওই হলে থাকতে বাধ্য করছিনা, শিক্ষার্থীরাই তাদের প্রয়োজনে থাকছে। নির্মানাধীন হলের কাজ শেষ হলেই তাদের নতুন হলে স্থানান্তর করা হবে।’