০৯ আগস্ট ২০২৫, ১৯:৫৭

পাবিপ্রবিতে টানা ৭ ঘণ্টা অনশনের পর অসুস্থ হয়ে দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে

অসুস্থ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়  © টিডিসি

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) হলের আসন ১০ শতাংশ কোটা এবং জুলাই ৬ হলের বিতর্কিত ফলাফল বাতিলের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেছিলেন পাঁচ ছাত্র। টানা ৭ ঘণ্টা অনশনে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়লে দুই শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

‎‎বুধবার (৬ আগস্ট) জুলাই ৬ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ২০২০-২১, ২০২১-২২,  ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীদের হলের ফলাফল দেওয়া হয়। ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপগুলোতে আসন বণ্টনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নানা আলোচনা-সমালোচনা করতে থাকেন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার (৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৫ জন ছাত্র সকাল ৯টা থেকে অনশনে বসেন। এই পাঁচ ছাত্র হলেন বাংলা বিভাগের মিকাইল হোসেন, গণিত বিভাগের তৌফিক হায়াত ওয়াসিন, সাখাওয়াত হোসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের সোহেল রানা, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আবু জিহাদ।

‎অনশনে থাকা অবস্থায় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গণিত বিভাগের ছাত্র তৌফিক হায়াত ওয়াসিন ও সমাজকর্ম বিভাগের সোহেল রানা অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চেকআপ করার পর তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে করে পাবনা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।

আরও‎ পড়ুন: প্রাথমিকে চালু হচ্ছে চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণ, নিয়োগে এগিয়ে থাকবেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা

‎শিক্ষার্থীদের দাবি, ৬ আগস্ট জুলাই ৬ হলে ২০২০-২১, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ ও ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রদের হলে ওঠার জন্য ফলাফল দেওয়া হয়। সেই ফলাফলে অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা ধরা পড়ে। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্ররা সমালোচনা শুরু করলেও দুই দিনের মধ্যে হল প্রশাসন এর কোনো সঠিক ব্যাখা দিতে পারেনি।

‎তাদের আরও দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীতিমালা তৈরি করে তাদের হাতে ১০ শতাংশ আসন রেখেছে। ফলাফল প্রকাশের সময় সে ১০ শতাংশ আসন তারা রাজনৈতিক দলগুলো এবং এক সমন্বয়কের মধ্যে বণ্টন করে। যারা যারা আসন পাওয়ার যোগ্য ছিলেন, তারা বঞ্চিত হয়েছেন।

‎এ অবস্থায় পাঁচ ছাত্র হল প্রশাসনের হাতে থাকা ১০ শতাংশ আসন এবং বিতর্কিত ফলাফল বাতিল করে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে আসন বণ্টনের দাবিতে অনশনে বসেছেন।
‎‎
‎দুই ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে অনশনে বসা বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মিকাইল হোসেন বলেন, ‘আমরা এখানে অনশনে বসেছি মূলত আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য। ইতিমধ্যেই আমাদের দুজন ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।’

আরও পড়ুন: হলে পচা ডিম-খিচুড়ি, ১৩ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

তিনি আরও বলেন, ‘‎আমরা আমাদের দাবিতে অনড়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্য যে সংরক্ষিত ১০ শতাংশ আসন রাখা হয়েছে, সেগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিয়ে দিক, যাদের বাসা দূরে, আর্থিকভাবে অসচ্ছল, বিশেষ করে যাদের বাবা নেই এবং যারা টিউশনি করে পড়াশোনা করছে, তাদের মধ্যে বণ্টন করা হোক এবং দ্বিতীয় মেধা তালিকাটি বাতিল করা হোক এবং নতুন করে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে মেধা তালিকা দিতে হবে।’

‎উল্লেখ্য, দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হওয়ার পর আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসনের আলোচনা চলছে।