দুরারোগ্য ব্যাধিতে শাবিপ্রবির দুই শিক্ষার্থীর অকাল মৃত্যু
- শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:২৬ PM , আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৯, ১০:১৮ PM
দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরার দেশে চলে গেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) দুই শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা হলেন কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের সৈয়দ আরিফ সাদিক প্রান্ত এবং সমাজকর্ম বিভাগের ২০১০-১১ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আল আমিন। পৃথক ভাবে বুধবার সকালে এবং বিকাল ৩ টায় তাদের মৃত্যুর সংবাদ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারে এক শোকাবহ অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা যায়, সৈয়দ আরিফ সাদিক প্রান্ত জিবিএস (Guillain barre syndrome) নামক ভয়াবহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মাস খানেক যাবত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে থাকাকালীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার এ মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড পলিমার সায়েন্স বিভাগ। প্রান্তের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধা জেলায়।
আরো দেখুন: জিবিএস ভাইরাসে আক্রান্ত শাবিপ্রবির প্রান্ত বাঁচতে চায়
বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সালমা আক্তার বলেন, এ ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। আমরা আশা করছি, প্রান্তর পরিবার ও বন্ধুরা খুব দ্রুত এ শোক কাটিয়ে উঠবে।
প্রসঙ্গগত, জিবিএস/ গিয়েন বারে সিনড্রোম বা ল্যান্ড্রির প্যারালাইসিস, প্রান্তীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণকারী অ্যাকিউট বা তীব্র পলিনিউরোপ্যাথি রোগ যার ফলে হাত-পা খুব দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়ে। কোন সংক্রমণ বা ইনফেকশনের পর এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি হয়। সাধারণত প্রতি এক লাখে সাধারণত একজন দুজন আক্রান্ত হয়। রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকেই প্রান্তর জন্য আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করেছিলো তার বিভাগ।
অন্যদিকে দুরারোগ্য ব্যাধি নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাবেক শিক্ষার্থী মো. আল আমিন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সমাজকর্ম বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সোহাগ আহমেদ। দীর্ঘ এক মাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর বুধবার বেলা ৩টার সময় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি ।
জানা যায়, মো. আল আমিন গত মাসের প্রথম দিকে পুলিশের এস আই পদে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়ে রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমীতে যোগদান করেন। ট্রেনিংরত অবস্থায় হঠাৎ নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে প্রাথমিকভাবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ পরে রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তিনি ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলার তিলাটিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। তার বাবা আবুল বাশার পেশায় একজন কৃষক। চার ভাইয়ের মধ্যে আল আমিন ছিলেন সবচেয়ে বড়। আল আমিন ৩৮তম বিসিএস নিয়োগ পরীক্ষার ‘রিটেন এক্সামের ফল প্রত্যাশীও ছিলেন।
প্রসঙ্গত, নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধের জন্য বাংলাদেশে কোন ভ্যাক্সিন নেই বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ধারাবাহিকভাবে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখলে অবস্থার উন্নতি হবে বলে চিকিৎসকরা আশ্বাস দিলেও অনেক কমসময়ই সুস্থ অবস্থায় ছিলেন তিনি। অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে যান আল আমিন।