১৩ মে ২০২৫, ০৯:১০

শোকজ নোটিশের প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

কুয়েটে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল  © টিডিসি ফটো

শিক্ষক লাঞ্ছনা এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে ‎‎ছাত্র কল্যাণ পরিচালকের দপ্তর থেকে শোকজ নোটিশ পাঠানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। ‎আজ মঙ্গলবার বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নবনিযুক্ত ভিসিকে ‘প্রহসনের’ তদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরুর জন্য আবেদন জানাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।

রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের (এসডাবলিউসি) সামনে জড়ো হতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে তারা মিছিল নিয়ে সব হল প্রদক্ষিণ করে টিচার্স ডরমেটরি হয়ে ভিসি ভবনের সামনে দিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান। সেখান থেকে পুনরায় এসডাব্লিসিতে ফিরে আসেন তারা।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘প্রহসনের বিচার হলে, কারও গদি টিকবে না রে’, ‘হামলা মামলা বহিষ্কার প্রহসনের তদন্ত, মানি না মানব না’-সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। এ সময় তারা এই শোকজ নোটিশকে প্রহসনের বিচার বলে আখ্যায়িত করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, এই প্রহসনমূলক তদন্তকে পূর্বেই সিন্ডিকেট কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এই তদন্তের ওপর ভিত্তি করে ৩০ জন সাধারণ শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। তারা বলেছিলেন, যদি কোনও শিক্ষার্থী শিক্ষক লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে তদন্ত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে।

‎‎শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, এই ৩৭ জন শিক্ষার্থীর লিস্ট প্রকাশিত হওয়ার আগেই ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন, তাদের সাতজন কর্মীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুতরাং স্পষ্টভাবেই এ তদন্ত নিরপেক্ষ তদন্ত ছিল না।

‎‎নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘যখন ৩৭ জনকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং জানা যায়, ছাত্রদলের কর্মী মাত্র সাতজন। তখনই আমরা ধারণা করি যে, আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তখনই আমরা এই তদন্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় সিন্ডিকেট মিটিংয়ে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। এমন একটা তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে পুনরায় শোকজ লেটার পাঠানোকে শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না।’

আরও পড়ুন: গুচ্ছের ‘এ’ ইউনিটের ফল প্রকাশ হতে পারে আজ

‎তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি আমাদের কেউ অপরাধ করলে সেটার নিরপেক্ষ তদন্ত করে বিচার করতে। কিন্তু ছাত্রদলের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদেরকে একই প্লাটফর্মে এনে তাদের অপরাধকে গুরুত্বহীন করে তুলে ধরা হচ্ছে।’ ‎তিনি এ তদন্তের ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যন্ত বিভিন্ন পেইজে প্রচারিত হয়েছে। সেখানে এই তদন্ত রিপোর্টের স্বচ্ছতা নিয়েও তাদের প্রশ্ন রয়েছে?

‎জানা গেছে, সোমবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ কার্যালয় থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। এতে হ্যান্ড মাইক হাতে নেতৃত্ব দেওয়া, উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের উত্তেজিত করা, গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো, ভাইস চ্যান্সেলর এবং শিক্ষকদের নামে অশ্লীল স্লোগান দেওয়া, অ্যাকাডেমিক ভবনসমূহে তালা মারা, কোনো তদন্ত ছাড়াই তৎকালীন উপাচার্যকে ৫ দফা মানতে চাপ প্রয়োগ করা এবং কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত প্রশাসনিক ভবনে ব্যানার লাগানোসহ অসংখ্য অভিযোগ আনা হয়েছে।