ছাত্র আন্দোলনে নিহত হৃদয় তরুয়ার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পবিপ্রবি
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২২)। নিহত শিক্ষার্থীর পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা। ২৯ সেপ্টেম্বর (রবিবার) বেলা তিনটার দিকে পটুয়াখালী শহরের মুন্সেফপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় এসে নিহত হৃদয়ের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানান।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে পেয়ে হৃদয়ের বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া, মা অর্চনা রানী ও বোন নিতু রানী কান্নায় ভেঙে পড়েন। শিক্ষকেরা হৃদয়ের মা–বাবাকে সান্ত্বনা দেন এবং তাদের পাশের থাকার কথা বলেন। এ সময় শিক্ষকেরা হৃদয়ের বাবা-মায়ের হাতে নগদ অর্থ তুলে দেন। পাশাপাশি হৃদয়ের বোনের জন্য পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ারও আশ্বাস দেন।
সকল শহীদ ও আহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে পবিপ্রবি'র উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, “হৃদয়ের বাড়িতে এমন একটা দিনে আসবো এটা কখন কাম্য ছিল না। হৃদয় আমাদের সকালের হৃদয়ে আছে। তার পরিবারের পাশে থাকার জন্য যা করণীয় তা করার চেষ্টা করব।”
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন ‘ল’ এন্ড ল্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো. আব্দুল লতিফ, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর কবির, ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান, প্রক্টর অধ্যাপক আবুল বাশার খান, রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে নিয়োজিত অধ্যাপক ড. এসএম হেমায়েত জাহান, অধ্যাপক মো. জামাল হোসেন, অধ্যাপক ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মামুনুর রশীদ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. আমিনুল ইসলাম টিটো, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ইমরান হোসেন, প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক আরিফুর রহমান নোমান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কোটা আন্দোলন: সহিংসতায় জড়িতদের চিহ্নিত করতে ঢাবিতে কমিটি
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় টিউশনি করে ফেরার পথে চট্টগ্রামের চাটগাঁ আবাসিক এলাকায় আন্দোলনকারীদের পেছনে পড়েন হৃদয়। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি হঠাৎ গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ জুলাই ভোর পাঁচটার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত হৃদয়ের বাবা কাঠমিস্ত্রি রতন চন্দ্র তরুয়া ও মা অর্চনা রানী। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার ঘটকের আন্দুয়া গ্রামে। অনেক বছর ধরে জেলা শহরে ভাড়া বাসায় বসবাস করছেন তারা। নিহত হৃদয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।