সর্বজনীন পেনশন বাতিলের দাবি, অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে শাবিপ্রবি শিক্ষকরা

অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে শাবিপ্রবি শিক্ষকরা
অর্ধদিবস কর্মবিরতিতে শাবিপ্রবি শিক্ষকরা  © সংগৃহীত

অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, প্রতিশ্রুত সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতনস্কেল প্রবর্তনের দাবিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করেছে। 

মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুর ১২টায় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীরসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ। 

শাবি শিক্ষক সমিতি নিজেদের দাবি তুলে ধরে বলেন, শিক্ষকদের আত্মমর্যাদা এবং গৌরব রক্ষায় গত মে ২০২৪ থেকে গণস্বাক্ষর, মানববন্ধন, কালোব্যাজ ধারণ, অবস্থান কর্মসূচিসহ নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করে আসছি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, অদ্যাবধি যথাযথ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আমাদের অবস্থান করার কথা ছিলো ক্লাসে,ল্যাবে,গবেষণায় কিন্তু আজ আমাদেরকে অবস্থান করতে হচ্ছে রাস্তায়, এটা একটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার লজ্জার ফসল।

একটা দেশে দুই নীতি চলতে পারেনা। প্রত্যয় নাম দিয়ে শিক্ষকদের সাথে যেভাবে অবজ্ঞা আর অবহেলা করা হচ্ছে তাতে দেশ মেধাশূন্য হবে। ডিপার্টমেন্টের ভালো ভালো মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে আমরা ধরে রাখতে পারছিনা, গ্রাজুয়েট শেষ করে তারা দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। তার একটাই কারণ শিক্ষা ব্যবস্থায়  অবমূল্যায়ন।

তারা আরো বলেন, আমরা ৩০ তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করবো, ৩০ তারিখের মধ্যে সরকার আমাদের তিন দফা দাবি মেনে না নিলে আগামী পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করব এবং যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হবে ততদিন পর্যন্ত ক্লাস পরীক্ষা অফিস সবকিছু বর্জন থাকবে। 

আগামী দিনগুলোতে সর্বাত্মক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে শিক্ষকদের আহব্বান জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ  আনোয়ার হোসেন বলেন, এই আন্দোলন থেকে কোনভাবেই পিছপা হওয়া যাবে না এজন্য আমাদের মানসিক প্রস্তুতি দরকার।

তিনি আরো বলেন, একটা স্মার্ট আধুনিক ও সভ্য জাতি তৈরির প্রোডাকশন হাউস হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সাথে যদি রাষ্ট্র বৈষম্যমূলক আচরণ করে তাহলে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে। তাই পহেলা জুলাই থেকে সর্বাত্মক আন্দোলনে যাওয়ার আগেই দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান তিনি। 

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর কবীর বলেন, আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে চাই। আমাদের দাবি মেনে নিয়ে আমাদেরক ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন। শিক্ষকরা তাদের মর্যাদা লড়াইয়ে আজ রাস্তায় নেমেছে। আমরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করেই যাব। তাই আমাদের দাবি মেনে নিয়ে দেশের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে আমাদেরকে ক্লাসে ফেরার সুযোগ দিন। 

উল্লেখ্য, ২৫ থেকে ২৭ জুন ৩ দিন অর্ধ দিবস কর্মসূচি, ৩০ জুন পূর্ণ দিবস কর্মসূচি এবং পহেলা জুলাই থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত  সর্বাত্মক কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা করা হয়েছে। 


সর্বশেষ সংবাদ