পাবিপ্রবির ৪র্থ গ্রেডের কর্মকর্তাদের পদন্নোতি বাতিল চেয়ে স্মারকলিপি

  © সংগৃহীত

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ গ্রেডে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/অতিরিক্ত পরিচালক পদের অবৈধ পদন্নোতি বাতিল চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর স্মারক লিপি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ রেজিস্ট্রার অফিসে রেজিস্ট্রারের কাছে স্মারকলিপিটি পৌঁছে দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ইতোপূর্বে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭ জন কর্মকর্তাকে ৪র্থ গ্রেডে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/ অতিরিক্ত পরিচালক পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বিষয়টি জানতে পারলে এসব পদন্নোতি অবৈধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দেন। এই পদগুলোতে যাদের পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে তাদেরকে দেওয়া অর্থ আদায় করে কমিশনকে অবহিত করার জন্য ইউজিসির পরিদর্শক দল সুপারিশ করেছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর এ নিয়ে অডিট আপত্তি দেন। সেখানে ১৯ লক্ষ ৮২ হাজার ৭০০ টাকা রাষ্ট্রীয় ক্ষতি দেখানো হয়েছে। 

ঐ স্মারক লিপিতে কর্মকর্তারা আরও উল্লেখ করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পূর্ববর্তী নির্দেশনা অমান্য করে নতুন করে ৪ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/অতিরিক্ত পরিচালক পদে ২৬ সেপ্টেম্বর গোপনে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করে অতিরিক্ত পদে পদন্নোতি দেওয়ার চক্রান্ত চলছে বলে তারা মৌখিকভাবে অবগত হয়েছেন। এই চার জন কর্মকর্তা হলেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো মনিরুজ্জামান, অর্থ ও হিসাব বিভাগের উপ পরিচালক জিএম শামসাদ ফখরুল, উপ-রেজিস্ট্রার শাওলী শারমিন, জনসংযোগ দপ্তরের উপ-পরিচালক ফারুক হোসেন চৌধুরী। 

কর্মকর্তারা স্মারক লিপিতে এই চারজন কর্মকর্তার অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/অতিরিক্ত পরিচালক পদে পদন্নোতি বাতিলের অনুরোধ করেন। 

আরও পড়ুন: শয়ন-সৈকতেই বন্দী ঢাবি ছাত্রলীগ, পূর্ণাঙ্গ কমিটি কবে?

প্রসঙ্গত, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী প্রশাসনিক কোন পদের অতিরিক্ত কোন পদ নেই। অর্থাৎ কাউকে অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার/ অতিরিক্ত পরিচালক পদে নিয়োগ কিংবা পদন্নোতি দেওয়ার সুযোগ নেই। এর আগে নিয়ম ভেঙে  ৫ম গ্রেডের ৮ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পদে পদন্নোতি দেওয়া হয়েছে।  এ বিষয়ে শিক্ষা অডিট অধিদপ্তর দুইবার অডিট আপত্তি  দিলেও সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিষ্পত্তি করেননি। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অর্গানোগ্রাম সেখানে অতিরিক্ত কোন পদ নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এর আগে নিয়মবহির্ভূত ভাবে ৮ জনকে পদন্নোতি দেন। এখন আবার নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ৪ জনকে পদন্নোতি দেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। আমরা এটা নিয়ে প্রশাসনকে অবহিত করেছি। প্রশাসন যদি এবার বিধি বহির্ভূত কাজ করে তাহলে আমরা আবার মাঠে নামবো।

কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা নীতিমালা ২০১৪ এ ৫ম গ্রেডের কোন কর্মকর্তাকে ৪র্থ গ্রেডে পদন্নোতি দেওয়া যাবেনা বলে উল্লেখ আছে। ৪র্থ গ্রেডে সরাসরি নিয়োগ দিতে হবে। এ নিয়ে ইউজিসি প্রশাসনকে চিঠিও দিয়েছেন। এরপরও ২৬ সেপ্টেম্বর প্রশাসন ৪ জন কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত পদে পদন্নোতি দিবেন বলে আমরা জেনেছি। আমরা নতুন করে এই ধরনের কোন অবৈধ পদন্নোতি চাইনা, আমরা চাই এটা বাতিল হোক।

নতুন চার কর্মকর্তার পদন্নোতির বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা। বিষয়টি নিয়ে আমরা মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি জানাবো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামে অতিরিক্ত পদ না থাকার বিষয়টি আমরা এসে অবগত হয়েছি। এটি নিয়ে অডিট আপত্তি এসেছে। আমরা এই বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি।


সর্বশেষ সংবাদ