নোবিপ্রবির পাকা সড়কে ৬-৭ ফুট বড় গর্ত, ভেঙে গেছে কালভার্টের স্ল্যাব
সড়ক নিয়ে ভোগান্তি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের যেন নিত্যদিনের ঘটনা। তারই ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে বড় গর্ত সৃষ্টির কারণে যান চলাচল বিঘ্ন ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার (২৩ আগস্ট) ভোর রাতে সড়কটির কালভার্টের স্ল্যাব ভেঙে ৬-৭ ফুট প্রস্থের এ গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া এই কালভার্টের বয়স প্রায় ৩০ বছর।
গর্ত সৃষ্টি হওয়ার পরে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকলেও গর্তের পাশ দিয়েই ছোট যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পকেট গেইটের সামনে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
তবে সড়কটি নিয়ে ভোগান্তি এক দিনের নয়। অপরিকল্পিত খাল খননের কারণে কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সড়কে কিছু অংশের মাটি ডেবে যায়। যার ফলে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতল বাস চলাচল বন্ধ ছিল। এছাড়াও খাল খননের পর রাস্তার পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি স্থাপন করা হয়। পর্যাপ্ত মাটি না থাকায় খুঁটি পড়ে নিহতের ঘটনাও ঘটে সোনাপুরে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আসার সময় থেকে সড়ক নিয়ে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সোনাপুর থেকে মাইজদীর দিকে ৪ লেন রাস্তা হওয়ায় দুর্ভোগ কমলেও সোনাপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এ রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়।
আরও পড়ুন: ওসমানী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার
এ ছাড়া প্রতিদিন মাইজদী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার পথে জিরো পয়েন্টের অতিরিক্ত জ্যামের কারণে শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময় শ্রেণিকক্ষে কিংবা পরীক্ষার হলে পৌছানো সম্ভব হয় না। জিরো পয়েন্ট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই সরু এবং অপরিকল্পিত দোকানপাট, বাজার, সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের কারণে বাসের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ জায়গা ফাঁকা থাকে না। যার কারণে প্রতিনিয়ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সময় অপচয় হচ্ছে।
অন্যদিকে মেরামতের অভাবে রাস্তার বেহাল দশা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত খাল খননের ফলে রাস্তার একপাশ ডেবে যাওয়ায় দ্বিতল বাসে শিক্ষার্থীদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। কিছুদিন আগেও একটি দ্বিতল বাস এই সড়কে যাতায়াতের সময় দূর্ঘটনাবশত একটি পুকুরে পড়ে যায়। কোনো শিক্ষার্থী না থাকায় সে যাত্রায় তেমন একটা হতাহতের খবর পাওয়া যায় নি। কিন্তু এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ কোনো স্থায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।
ফয়সাল মাহমুদ নামে এক শিক্ষার্থী জানান, বিশেষ করে সোনাপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিদিন জীবন ঝুঁকি নিয়ে ক্যাম্পাসে যেতে হয় আমাদেরকে, মনে হচ্ছে এই তো বাস রাস্তার বাহিরে পড়ে যাচ্ছে। রাস্তা অনেক সরু এবং একদিকে অনেক বেশে ডেবে গেছে। যদি এই ধরনের সমস্যাগুলো সমাধান না করলে যেকোনো সময় বড় কোনো ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। এই সমস্যার জন্য অনাবাসিক অনেক শিক্ষার্থী অনিয়মিত হয়ে পড়ছে ক্লাসে। তাদের মধ্যে ক্যাম্পাসে যেতে ভয় কাজ করে রাস্তার এই বেহাল দশার জন্য।
সড়কে গর্তের খবরে ঘটনাস্থলে আসেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নোয়াখালীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওয়াছিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানানোর পরপরই ঘটনাস্থলে আসি। সড়কটি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। যেভাবে দ্রুত চলাচলের উপযোগী হয় সে বিষয়ে আমাদের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম মহোদয়কে জানাবো।
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাকিরুল ইসলাম বলেন, স্টিলের ডেকিং সিট দিয়ে আপাতত যানচলাচল স্বাভাবিক করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর যেহেতু এখানে কালভার্ট ভেঙেছে তাই নতুন করে কালভার্ট নির্মাণ করতে হবে।
নোবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. দিদার-উল-আলম বলেন, গর্তে সবার ভোগান্তি হচ্ছে। আমরা বিষয়টি সড়ক জনপদ নোয়াখালীকে জানিয়েছি। তারা পরিদর্শন করেছে। দ্রুত যেনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় সে বিষয়ে তাদেরকে বলা হয়েছে।