শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে বশেমুরবিপ্রবিতে রাতভর আন্দোলন
শিক্ষক সংকট নিরসনের দাবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর বাসভবনের সামনে রাতভর অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যর বাসভবন, একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, ফিন্যান্স বিভাগে বর্তমানে পাঁচটি ব্যাচে প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দু’জন। ফলে ক্লাস-পরীক্ষা মারাত্মকভাবে ব্যহত হচ্ছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একাধিকবার অবগত করার পরও সংকট নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। একপ্রকার বাধ্য হয়েই তারা গত সোমবার (৭ আগস্ট) আন্দোলন শুরু করেন।
আন্দোলন শুরুর কিছু সময় পর উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে উপস্থিত হন এবং তাদের আশ্বস্ত করেন বুধবারের মধ্যে তিনি ইউজিসির নিকট থেকে শিক্ষক নিয়োগের অনুমতি আনবেন অন্যথায় নিজে পদত্যাগ করবেন বা শিক্ষার্থীদের সাথে একত্রিত হয়ে আন্দোলন করবেন। উপাচার্যর এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা বুধবার পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেন। কিন্তু উপাচার্য তার কথা রাখতে না পারায় বুধবার থেকে পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আরো পড়ুন: গুচ্ছের তৃতীয় পর্যায়ের প্রাথমিক ভর্তি শেষ আজ, মাইগ্রেশনের বিষয়ে নির্দেশনা
আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী মিনহাজ বলেন, বর্তমানে শিক্ষক সংকটের কারণে আমাদের অনেক কোর্সের ক্লাস ঠিকমত হচ্ছে না। একই শিক্ষাবর্ষের অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থীদের তুলনায় আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি। আমাদের জীবন নিয়ে এভাবে খেলা করার অধিকার প্রশাসনের নেই। বৃহস্পতিবারের মধ্যে যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হয়, শিক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা না করা হয় তবে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এদিকে, উপাচার্যর আশ্বাস অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ না করা হলেও বৃহস্পতিবার গুচ্ছ ভর্তি কার্যক্রম ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান সাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে অনিবার্য কারণবশত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকবে। তবে প্রশাসনের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সাথে একত্রে আন্দোলন করার যে কথা দিয়েছিলেন তার অংশ হিসেবেই মূলত একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শিক্ষক সংকট নিরসনের বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, শিক্ষার্থীরা আমার কাছে টাকা-পয়সা কিংবা ভালো খাবার চাচ্ছে না; তারা চাচ্ছে শিক্ষক, ভালো শিক্ষার পরিবেশ। এটাতো শিক্ষার্থী হিসেবে তাদের মৌলিক অধিকার। অথচ তাদের সেটুকুই দিতে পারছি না। এটি উপাচার্য হিসেবে আমার জন্য অত্যন্ত কষ্টের। শিক্ষকের জন্য আমি অসংখ্যবার ইউজিসিতে গিয়েছি। কিন্তু তারা দিব দিব করে দেয়নি। শেষপর্যন্ত তাই শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি।