সাংবাদিক মারধরের পাঁচ দিন পেরোলেও ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগ

আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুন
আহত সাংবাদিক আবদুল্লাহ আল মামুন  © টিডিসি ফটো

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্বারা এক সাংবাদিক মারধরের ঘটনার ৫ দিন পেরোলেও এখনও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি ছাত্রলীগের পাবিপ্রবি শাখা এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক। 

গত রোববার (২৩ জুলাই) দুপুরে পাবিপ্রবি ক্যাফেটেরিয়ায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দ্বারা মারধরের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক নয়া শতাব্দীর প্রতিনিধি এবং পাবিপ্রবি প্রেসক্লাবের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন।

ভুক্তভোগীর তথ্য অনুযায়ী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা ঐদিন দুপুরে প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব দুর্জয় কর্মকারকে ক্যাফেটেরিয়ায় আটক করেন। সংবাদ পেয়ে আবদুল্লাহ আল মামুন ক্যাফেটিরিয়ায় তাকে উদ্ধারে গেলে তাকেও আটকে রাখা হয়।

আরো পড়ুন: এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেল ১ লাখ ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী

এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাসুদ রানা সরকার, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম প্রান্ত, সাবেক প্রচার সম্পাদক ইকরামুল ইসলাম সাগর, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুল ইসলাম হৃদয়সহ  ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী মামুনকে তিন দফায় মারধর করেন। পরে তাকে আহত অবস্থায় পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। 

কিন্তু এ ঘটনার পাঁচ দিন পার হলেও এখনও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদুল ইসলাম বাবু বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগকে বিষয়টি জানিয়েছি। আর শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আমরা বিষয়টি বিস্তারিত খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করবো।

সাধারণ সম্পাদক মো নুরুল্লাহ বলেন, বর্তমানে আমরা ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে ঢাকায় অবস্থান করছি। ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরেই এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করবো এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন,  আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।

এ দিকে এই ঘটনার পরের দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নির্দেশে প্রক্টর কামাল হোসেনকে আহ্বায়ক এবং রসায়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রতন কুমার পালকে সদস্য সচিব করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে তদন্ত কাজে গড়িমসি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক।

তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির গঠনের চারদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোন পদক্ষেপ আমরা সাংবাদিকরা দেখতে পাইনি। তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত আমাদের কোন ফোন পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ইতোপূর্বে আমরা প্রশাসনকে অনেক তদন্ত কাজেই গড়িমসি করতে দেখেছি। এই তদন্ত কাজেও আমরা একই আভাস পাচ্ছি।

আরো পড়ুন: এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করবেন যেভাবে

এদিকে জানা গেছে, ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তদন্ত কাজে গড়িমসি করার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সাথে কয়েক দফায় দেখা করেছে। 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ড কামাল হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে আমরা কমিটির সদস্যরা এ বিষয়ে একটি মিটিং করেছি। আগামী সোমবার এ বিষয়ে দ্বিতীয় মিটিং অনুষ্ঠিত হবে সেখানে আমরা ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তদের কথা শুনবো। 

পক্ষপাতিত্বের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমরা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দ্রুত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেব এবং দোষীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।


সর্বশেষ সংবাদ