১৫ জুন ২০২৩, ০০:২৮

গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীদের কক্ষে ঢুকে পড়তেন মেস মালিক

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়  © ফাইল ছবি

মেস মালিক ও তার স্ত্রীর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে থানায় অভিযোগ করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) বেশ কয়েকজন ছাত্রী। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ ‘বিশ্বাস’ মেসের মালিক মো. রবিউল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া বেগমের নামে বুধবার (১৪ জুন) যশোর কোতোয়ালি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীরা।

ভুক্তভোগী ছাত্রীদের অভিযোগ, অনুমতি বিহীন গভীর রাতে রুমে পুরুষ মানুষ প্রবেশ, মনগড়া বাড়ি ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন বিষয়ে স্বেচ্ছাচারীতা করে আসছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ ‘বিশ্বাস’ মেসের মালিক মো. রবিউল ইসলাম (৫৫) ও তার স্ত্রী তানিয়া বেগম। সবশেষ বুধবার মেস মালিকের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও মারধরের ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বাড়িওয়ালা রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী। জিডির তথ্যমতে, যশোর কোতয়ালী মডেল থানাধীন আমবটতলা বাজার সংলগ্ন বিশ্বাস মেসে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ভাড়া থাকে। ১৪ জুন বিকাল অনুমান ৫টায় বিবাদীদ্বয়ের (রবিউল ইসলাম ও তানিয়া বেগম) সাথে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের সাথে ভাড়া নিয়া তর্ক-বিতর্ক শুরু হয়।

আরও পড়ুন: ছাত্রীরা হলে থাকতে না পারলে যাবেন কোথায়, সাদ্দামের প্রশ্ন

‘‘একপর্যায়ে বিবাদীদ্বয় ছাত্রীদের উপর ক্ষিপ্ত আমার সহপাঠী তামান্নাকে (ছদ্মনাম) মারপিট করে। আমি (সামিউল) চিৎকারের আওয়াজ পেয়ে নিচতলা গিয়ে বিবাদীদ্বয়ের নিকট ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে আমাকে মারধর করে এবং আমাকে ও আমার সহপাঠীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করিতে থাকে।’’

এতে বলা হয়, একপর্যায়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি তাজুল ইসলাম বাড়ির মালিক, শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের উপস্থিতিতে আলোচনার মাধ্যমে বিবদমান বাকি সমস্যাগুলো সমাধান করেন। পরবর্তীতে ছাত্রীরা নিরাপত্তার আশঙ্কা করলে পুলিশ প্রশাসন ছাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তা প্রদানের আশ্বাস দেন।

মেসের ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বলেন, মেস মালিক ও তার স্ত্রী বিভিন্ন সময় মেসের ছাত্রীদের মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। কছুদিন পরপর মেসের সিট ভাড়াসহ বিভিন্ন জিনিসের ভাড়া বাড়িয়ে দিতেন। অসামাঞ্জস্য বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করতেন। বিদ্যুৎ বিলের কাগজ দেখতে চাইলে তাদের নোংরা ভাষায় কথা শোনাতেন। কেউ মেস ছাড়তে গেলেও হেনস্তার শিকার হতো ছাত্রীদের।

ভুক্তভোগী আরেক ছাত্রী বলেন, মেস মালিক সময়ের-অসময়ে মেয়েদের রুমে চেলে আসতেন। যার ফলে আমারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলাম। এছাড়া মেসের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও ভালো না। যেকোন সময়ে বাড়িওয়ালাসহ বাইরের লোক মেসের ভেতর প্রবেশ করে। কোন সমস্যা নিয়ে অভিযোগ দিতে গেলে উল্টো আমাদের নোংরা ভাষায় কথা শোনায়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. সাদিদ হোসাইন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটস্থ 'বিশ্বাস' মেসে ছাত্রীদের সাথে বাড়িওয়ালার বাক-বিতণ্ডা খবর পেয়ে মেসে যায়। পরে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় নিয়ে যশোর কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। আমরা ছাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ।