ফারদিন হত্যা মামলা: ‘নারাজি’ দিতে সময় চেয়েছেন বাবা

ফারদিন হত্যা মামলা: ‘নারাজি’ দিতে সময় চেয়েছেন বাবা
ফারদিন হত্যা মামলা: ‘নারাজি’ দিতে সময় চেয়েছেন বাবা  © সংগৃহীত

বাংলাদেশ প্রকৌশ বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ হত্যা মামলায় ডিবির দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন আপত্তি জানিয়ে ‘নারাজি’ আবেদন দিতে সময় চেয়েছেন তার বাবা কাজী নুরউদ্দিন রানা। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তার আইনজীবীরা সময়ের আবেদন করলে ঢাকার মহানগর হাকিম মো. শান্ত ইসলাম মল্লিক তা মঞ্জুর করে আগামী ১৬ মার্চ মামলার পরবর্তী তারিখ রাখেন।

এদিন ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার অব্যাহতি চেয়ে ডিবির দেওয়া প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য ছিল। পরে নারাজি দেওয়ার কথা জানিয়ে সময় চায় বাদীপক্ষ।

মামলার বাদী কাজী নুরউদ্দিনবলেন, তারা নারাজি আবেদন দিতে চাইলেও এখনো মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন হাতে পাননি।

তার আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হীরন বলেন, ‘‘কেন আমাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন সরবরাহ করা হচ্ছে না, বুঝতে পারছি না। অথচ সেটি পাওয়ার একশতভাগ অধিকার রয়েছে বাদীর।''

আরও পড়ুন: ফারদিন নয়, ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে ঘুরেছে তার ফোন

ফারদিন হত্যা মামলার একমাত্র আসামি বুশরা মঙ্গলবার আদালতে হাজিরা দেন। তার পক্ষে স্থায়ী জামিন চেয়ে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান। শুনানি শেষে আদালত আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জামিনের আদেশ দেন।

ফারদিন হত্যা মামলায় গত ৬ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার।

সেখানে বলা হয়, ‘‘স্পেনে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যাওয়ার বিমান ভাড়া সংগ্রহ করতে না পারা, ছোট দুই ভাইকে টিউশনি করে পড়াশোনার খরচ জোগানোয় সংগ্রাম করতে হওয়াসহ নানা কারণে হতাশা থেকে ফারদিন আত্মহত্যা করেন।''

বুয়েটের পুরকৌশলের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফারদিন (২৪) বিতার্কিক ছিলেন। গত বছরের ডিসেম্বরে স্পেনের এক অনুষ্ঠানে তার যাওয়ার কথা ছিল। তার এক মাস আগে গত বছরের ৪ ডিসেম্বর দুপুরে ঢাকার ডেমরার কোনাপাড়ার বাড়ি থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন ফারদিন। বাবা-মার বড় ছেলে ফারদিন কোনাপাড়ায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন।

ফারদিন বেরিয়ে যাওয়ার সময় মাকে বলে গিয়েছিলেন, পরদিন তার পরীক্ষা রয়েছে বলে রাতে বুয়েটের হলেই থাকবেন। পরীক্ষা দিয়ে বাসায় ফিরবেন। কিন্তু পরদিন পরীক্ষায় তার অনুপস্থিত থাকার খবর জেনে খোঁজাখুজি করেও ছেলেকে না পেয়ে থানায় জিডি করেন নূরউদ্দিন রানা। তিন দিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড়ে ফারদিনের লাশ পাওয়া যায়।

এরপর ১০ নভেম্বর নূরউদ্দিন রানা হত্যা মামলা করেন। তাতে আসামি করেন বুশরাকে, যার সঙ্গে ফারদিন দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত ছিলেন। তখন পুলিশ বুশরাকে গ্রেপ্তার করে, হেফাজতে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। ফারদিনের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠে। র‍্যাব প্রথমে দাবী করেছিলো তাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে পরে র‍্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয় যে সে আত্মহত্যা করেছে। পরবর্তীতে ফারদিন ‘আত্মহত্যা' করেছেন জানিয়ে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে বুশরাকে জামিন দেয় আদালত।


সর্বশেষ সংবাদ