শতভাগ উৎসব ভাতাসহ ৮ দাবি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের
এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা শতভাগ উৎসব ভাতাসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সংবাদ সম্মেলনর আয়োজন হয়। এতে বাংলাদেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মচারী জাতীয় ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আট দাবি তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্মচারী জাতীয় ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়কারী মো. আজিজুল হক রাজা সভাপতিত্ব করেন এবং সদস্য সচিব মো. হাবিবুর রহমান লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ।
বক্তব্যে তিনি বলেন, উৎসব ভাতার দাবিতে কর্মচারীদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ফলে ২০০৪ সালে তৎকালীন জোট সরকারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কর্মচারীদের ৫০% উৎসব ভাতা প্রদান করেছিলেন। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়, হঠাৎ গত ঈদের পূর্বে সরকার শুধু শিক্ষকদের ২৫% উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করে উৎসব ভাতা প্রদান করলেও কর্মচারীদের কোন উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করে নাই। ফলে সাড়া দেশে কর্মচারীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা যা কর্মচারীদের বাদ রেখে শুধু শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং আগামী ঈদের পূর্বেই কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানাই।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটিতে একজন কর্মচারী প্রতিনিধি রাখার বিধান রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্মচারী চাকরি বিধি ২০১২ প্রবিধান জারি করলেও অজ্ঞাত কারণে তা অদ্যাবধি শিক্ষা বোর্ড ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তা বাস্তবায়ন করেনি যা অতন্ত দুঃখজনক। আমরা অবিলম্বে কর্মচারীদের চাকরিবিধি ২০১২ এর মোতাবেক গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটিতে কর্মচারীদের একজন প্রতিনিধি অন্তভূক্ত করার দাবি জানাই।
মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিলে জাতীয় বাজেট থেকে সহায়ক অংকের অর্থ সীড মানি হিসেবে প্রদানসহ অবসর বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টের নীতিমালা ও গঠন প্রক্রিয়া সংস্কার করে সরকারী কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে হবে। শিক্ষক কর্মচারীদের ওপর অনাবশ্যক চাঁদা আদায়ের নীতিমালা আমরা সমর্থন করি না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৈশ প্রহরী ও নিরাপত্তা কর্মী এক অমানবিক জীবন যাপন করে। তারা সাপ্তাহিক ছুটি পায় না। ঈদ, পার্বণ, পূজা, বা কোন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেও ছুটি পায় না। এমনকি কোন ছুটি ভাতাও পায় না। যা আন্তর্জাতিক শ্রম আইন পরিপন্থী। আমরা প্রতি প্রতিষ্ঠানে ২ জন নৈশপ্রহরী নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: তিন দাবি নিয়ে আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা
তাদের ৮ দফা দাবি হলো- আসন্ন ঈদের পূর্বেই কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করতে হবে; গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটিতে কর্মচারীদের একজন প্রতিনিধি অর্ন্তভুক্ত করতে হবে; সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় পূর্ণাঙ্গ পেনশন প্রদান করতে হবে; কর্মচারীদের সার্বজনীন বদলির ব্যবস্থা করতে হবে এবং প্রতি প্রতিষ্ঠানে ২ জন নৈশপ্রহরী নিয়োগ দিতে হবে; কর্মচারীদের ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতাসহ শিক্ষাভাতা, টিফিনভাতা এবং সরকারি কর্মচারীদের ন্যায় বাড়ি ভাড়া প্রদান করতে হবে; ল্যাব সহকারী কর্মচারীদের ৩য় শ্রেণি কর্মচারী হিসেবে পদায়ন করতে হবে। এবং নন এমপিও কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত করতে হবে; ৯ম পে-স্কেলে ১:৪ অনুপাত বাস্তবায়ন করতে হবে এবং ৩য় শ্রেণি কর্মচারীদের পদবি পরিবর্তন করে 'প্রশাসনিক কর্মকর্তা' পদবি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত করতে হবে এবং যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ৪র্থ কর্মচারীদের পদন্নোতি দিতে হবে।
দাবি আদায়ে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে ১৫ নভেম্বর থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মতবিনিময় ও শিক্ষা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কৃর্তপক্ষের নিকট স্মারকলিপি প্রদান। ২১ নভেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জেলা ও বিভাগীয় শহরে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গণসংযোগ। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পরিষদের জাতীয় প্রতিনিধি সভা এবং জাতীয় প্রতিনিধি সভায় আন্দোলনের কর্মসূচি প্রণয়ন ও মহাসমাবেশের তারিখ নির্ধারণ।