ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষক

এমপিওভুক্তির দাবি নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার পথে প্রাণ গেল শিক্ষিকার

লাল রঙ দিয়ে মার্ক করা ছবিটি নিহত শিক্ষিকা তানিয়া সুলতানার
লাল রঙ দিয়ে মার্ক করা ছবিটি নিহত শিক্ষিকা তানিয়া সুলতানার  © সংগৃহীত

এমপিওভুক্তির দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় যাওয়ার পথে প্রাণ হারান তিনি।

নিহত শিক্ষিকার নাম তানিয়া সুলতানা। তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার দেশগাঁও ডিগ্রি কলেজের তৃতীয় শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

জানা গেছে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ডিগ্রি কলেজগুলোতে প্রতিটি বিষয়ে তিনজন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। তবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালায় দুইজন শিক্ষক এমপিভুক্ত হতে পারেন। এই সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নেয়। মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১ম ও ২য় নিয়োগ-চক্রে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগকৃত ৭১ জন সহ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত মোট ৮৪১ জনের তালিকা প্রকাশের মাধ্যমে তাদের এমপিওভুক্তির সুযোগ দেয়া হয়। কিন্তু ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রায় ৭৯ জন ও কমিটিকর্তৃক নিয়োগকৃত একাংশ তৃতীয় শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারেনি। 

শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে ২০২২ সালের ১ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক নির্দেশ মোতাবেক মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ২০১৯ পর অর্থাৎ ২০২২ সালে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রায় ৭৯ জন ও ২০১৬ সাল পর্যন্ত কমিটি কর্তৃক নিয়োগকৃত শিক্ষকদের তথ্য প্রেরণ করেন। কিন্তু মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও উক্ত শিক্ষকেরা এমপিও এর মুখ দেখেনি। এই অবস্থায় নিজেদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিতে প্রতি সপ্তাহে একবার করে মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্থ হয়। তেমনিভাবেই এমপিওভুক্তির খোঁজ নিতে গত সপ্তাহে নিজ বাড়ি থেকে মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে রওনা দেন তানিয়া সুলতানা। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। 

এবিষয়ে বেগম ফায়জুন্নেসা মহিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক তাসলিমা নাজনীন সাথি বলেন, প্রায় ৯ মাস আগে ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের তালিকা সংগ্রহ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এখনো আমাদের এমপিওভুক্তির কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। বার বার কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিতে আমাদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যান। যার ধারাবাহিকতায় তানিয়া সুলতানাও এসেছিলেন। কিন্তু তার আর কলেজে ফেরা হলো না। আমাদের আরেকজন শিক্ষক আর্থিক সংকটে নিজের কিডনি বিক্রির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। যা সত্যি হতাশাজনক। 

খলিলুর রহমান ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক শারমিন আক্তার বলেন, ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণায়ের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা কেবল আমাদের সান্ত্বনার বাণী শোনাচ্ছেন। আমাদের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ২০২২ সালে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগকৃত প্রায় ৭৯ জন তৃতীয় শিক্ষক এমপিওভুক্ত হতে পারিনি। এর কারণে আমাদের জীবন অভিশপ্ত ও দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। 

তিনি আরও বলেন, যেখানে টাকা ছাড়া একটা মুহূর্ত কল্পনা করা যায় না সেখানে ডিগ্রির ৩য় শিক্ষকেরা বেতন ছাড়াই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর অতিবাহিত করছেন। আজ তাদের জীবন  রূপ পেয়েছে  যেন সাদা কাফনে মুড়ানো জীবন্ত লাশে ।

সালেহা বেগম ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি প্রভাষক শাহীন রেজা বলেন, ইতোমধ্যে এনটিআরসিএ কর্তৃক নিয়োগকৃত ৭১ জন শিক্ষক এমপিওভুক্তির আদেশ পেয়েছেন। তাহলে আমরা কেন পাব না? কেউ পাবে কেউ পাবে না, এটা হতে পারে না। তাই আমাদের দাবি শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপে যেন অতিদ্রুত আমাদের এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence