করোনায় শিক্ষার্থী ঝরে পড়া ও শিশুশ্রম বৃদ্ধির আশঙ্কা বাড়ছে
- শিউলি রহমান
- প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২০, ০১:৩৬ PM , আপডেট: ২৫ জুন ২০২০, ০১:৩৬ PM
দেশে করোনাভাইরাস মহামারি পরিস্থিতিতে নিম্ন আয়ের পরিবারের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং সামাজিক সেবা হ্রাস পাচ্ছে। ফলে শিশুদের আারও বেশি শ্রমিকের কাজ করার দিকে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি স্কুল থেকে ঝরে পড়া বাড়তে পারে। এতে শিক্ষার হার বৃদ্ধি ও শিশুশ্রম হ্রাসের অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বিশ্লেষকদের মতে, শিশুশ্রম যাতে বৃদ্ধি না পায় সেজন্য দারিদ্রতা নিরসনে পদক্ষেপ নিতে হবে। সেইসাথে এ ধরনের খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরমের পরিচালক আব্দুছ সহিদ মাহমুদ বলেন, করোনার কারণে শিশু পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইন সার্ভে করেছি। সে অনুযায়ী, শিশুশ্রম ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৫ সালের শিশুশ্রম প্রতিবেদনে ৪৭ শতাংশ কমেছে বলা হয়েছে। কিন্তু এতে দ্বিমত পোষণ করি। তবে শিশুশ্রমের হার কমেছে সন্দেহ নেই। এখন অনেক শিশু ত্রাণ, চুরি এবং শ্রমে যুক্ত হয়ে জীবন কাটাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আরও অনেক শিশুর শ্রমে যুক্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হবে।
জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবসে ‘কোভিড-১৯ ও শিশুশ্রম: সংকটের সময়, পদক্ষেপের সময়’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, শিশু শ্রমের সংখ্যা ৯ কোটি ৪০ লাখে কমে আসলেও করোনার কারণে তা ঝুঁকির মুখে পড়তে বসেছে। এ বছরেই ৬ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়ে যেতে পারে। দারিদ্র এক শতাংশ বাড়লে শিশুশ্রম দশমিক ৭ শতাংশ বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ ব্যাপারে মানুষের জন্য ফাইন্ডেশনের পরিচালক শাহিন আনাম বলেন, স্বল্প সময়ে দুটি সার্ভে করে দেখেছি, শিশুরা সর্বাধিক ঝুঁকিতে আছে। তারা ঝুকিঁপূর্ণ শ্রমে যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি সহিংসতার শিকার হবে। পরিবার নিম্ন আয়ের হওয়ায় মানসিক ও শারীরিক চাপ বাড়বে। তাদের সেই চাপ সামলে নিতে কাজ করতে হবে বলেও মনে করেন তিনি।
গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, মার্চ-এপ্রিলে করা একটা সার্ভে মতে, তথ্য ও বিজ্ঞান, তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষার সাথে যুক্ত করায় এ খাতে বরাদ্দ কমে গেছে। গতবছর ছিল জিডিপির দুই দশমিক ১২ শতাংশ। এ বছর জিডিপির দুই দশমিক শুন্য নয় শতাংশ। দক্ষিন এশিয়ার নিন্মতম অবস্থানে রয়েছি আমরা। শিক্ষাক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে গেলেও তা এখন হুমকির সম্মুখীন। অবস্থান ধরে রাখতে প্রদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দেন তিনি।