মালিকদের গ্রেপ্তারের পর ক্ষতিগ্রস্ত আগের কেউই অর্থ ফেরত পাননি

মালিকদের গ্রেপ্তারের পর ক্ষতিগ্রস্ত আগের কেউই অর্থ ফেরত পাননি
মালিকদের গ্রেপ্তারের পর ক্ষতিগ্রস্ত আগের কেউই অর্থ ফেরত পাননি  © ফাইল ফটো

দেড় দশক আগে বিতর্কিত মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং ব্যবসার নামে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে যুবক। প্রতারণার অভিযোগে ২০০৬ সালে যুবকের কার্যক্রম ও বন্ধ করে দেয় সরকার। যুবকে যারা টাকা দিয়েছেন তারা সেই টাকা আজও ফেরত পাননি।

যুবকের মতোই প্রতারণা এবং জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে ডেসটিনি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও। মানুষের কাছ থেকে চার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও জালিয়াতির মামলায় ডেসটিনির শীর্ষ ব্যক্তিরা এখন কারাগারে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শুরু হয়েছে ই-কর্মাসের নামে নানা প্রতারণা। ই-ভ্যালি এবং ই-অরেঞ্জ মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী র‍্যাব বলছে, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ রাসেল জানিয়েছেন, গ্রাহকের টাকা ফেরত দেবার কোন পরিকল্পনা তার নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক নাজমা বেগম বলেন, এসব অনিয়ম ও প্রতারণার বিরুদ্ধে প্রথম থেকে ব্যবস্থা না নিলে মানুষের টাকা ফিরে পাওয়া রীতিমতো অসম্ভব হয়ে উঠে।

তিনি বলেন, টাকা হান্ড্রেট পার্সেন্ট ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না, কোনভাবেই সম্ভব না। যখন ব্যাপারটা ঘটে যায় তখন কিছু করার থাকে না। এসব কোম্পানির সম্পদের চেয়ে দেনার পরিমাণ অনেক বেশি। সেজন্য তাদের টাকা ফিরিয়ে দেবার ক্ষমতাও নেই।

ডেসটিনি-যুবক-ইউনিপে ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মানুষকে নানা প্রলোভন দিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে ওইসব প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাদের কেউ কেউ গ্রেপ্তারও হন। কিন্তু ওইসব প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা কিছুই পাননি। ইভ্যালির গ্রাহকরাও শেষ পর্যন্ত তাদের টাকা ফেরত পাবেন কিনা এ প্রশ্ন এখন অনেকেরই।

গ্রাহকদের টাকার কী হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পরিষ্কার করে কিছু বলতে পারছেন না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে এসব ক্ষেত্রে যা ঘটেছে সে ব্যাপারে তাদের কোন দায় নেই। এজন্য অভিযুক্তদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, যুবক এবং ডেসটিনির বিষয়টি এখন আইনগত প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। এছাড়া ইভ্যালির বিরুদ্ধে যেহেতু মামলা হয়েছে, টাকা আদায়ের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে সরকার কী ধরণের ভূমিকা রাখবে সেটি এখনই বলা যাচ্ছে না।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, ইভ্যালির অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে তথ্য-উপাত্ত চেয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চিঠি দিয়েছে অনুসন্ধান টিম। ই-ভ্যালি নিয়ে অন্যান্য সংস্থাও কাজ করছে। আর আমাদের নিজস্ব অনুসন্ধান এখনো চলমান। আইন অনুযায়ী অপরাধ পাওয়া গেলে যাকে প্রয়োজন অনুসন্ধান টিম তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ