আইসিটি খাতে হওয়া দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার দাবি ব্যবসায়ীদের

অবস্থান কর্মসূচির ছবি
অবস্থান কর্মসূচির ছবি  © টিডিসি ফটো

আইসিটি খাতে দুর্নীতি রোধ, স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ও ন্যায্য প্রতিযোগিতা প্রতিষ্ঠার জন্য ১২ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন আইসিটি খাতের স্টেকহোল্ডার ব্যানারে এ খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা। বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি এবং পরে আইসিটি সচিব শীষ হায়দার চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি জমা দেন স্টেকহোল্ডাররা।

এসময় অবস্থান কর্মসূচি পালন করা স্টেকহোল্ডাররা জানান, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি গত ১৭ বছর ধরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম ও লুটপাট চলছে যা কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীর কারণে এখনো চলমান। এই অনিয়মের অবসান না হলে এবং ফ্যাসিস্টের নিয়োগকৃত অসাধু কর্মকর্তাগণ স্বপদে বহাল থাকলে জুলাইয়ের আন্দোলনে উজ্জীবিত বাংলাদেশে একটি টেকসই ও স্বচ্ছ স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা সম্ভব হবে না

এসময় তারা ১২ দফা দাবি পেশ করেন। এরমধ্যে রয়েছে, 

১. আইসিটি খাতে দুর্নীতির তদন্ত ও বিচার: গত ১৫ বছর ধরে আইসিটি খাতে হাজার কোটি টাকা পাচারের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং দোষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। সংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও ব্যক্তিদের কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে

২. স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক স্টার্ট-আপ ইকোসিস্টেম: আইসিটি খাতে ফ্যাসিস্ট মদদপুষ্ট কোম্পানি ও কর্মকর্তাদের প্রভাবমুক্ত একটি ব্যবসায়ী বান্ধব স্টার্ট-আপ ফাইন্যান্স ও ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে হবে।

৩. সরকারি সফটওয়্যার কাজে সিন্ডিকেটের বিলুপ্তি: সরকারি সফটওয়্যার প্রকল্পগুলোতে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সিন্ডিকেট ব্যবস্থা বিলুপ্ত করতে হবে।

৪. পিপিআরএ পরিবর্তন: তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সরকারি প্রকল্পের ক্রয় নীতিমালা সংশোধন করতে হবে।

৫. ফ্যাসিস্ট আশীর্বাদপুষ্ট কোম্পানিগুলোর কালো তালিকাভুক্তি: বিগত ১৫ বছরে সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের অপব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করে কালো তালিকাভুক্ত করতে হবে।

৬. দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ: আইসিটি খাতে দুর্নীতির প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে একটি নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক কমিটি গঠন করতে হবে এবং দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে হবে।

৭. বিতর্কিত ব্যক্তি ও কর্মকর্তাদের অপসারণ: আইসিটি খাতের নীতিনির্ধারণী ও প্রশাসনিক পর্যায়ে থাকা দুর্নীতির সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অপসারণ করতে হবে এবং তাদের স্থলে স্বচ্ছ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে
হবে।

৮. স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামি আহমেদ ও তার সহযোগীদের পদত্যাগ: স্টার্ট-আপ বাংলাদেশ-এর কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য এর বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর সামি আহমেদ ও তার সহযোগীদের পদত্যাগ নিশ্চিত করতে হবে।

৯. আইসিটি সেবার অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের তদন্ত: আইসিটি সেবার নামে দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

১০. স্টার্ট-আপ ও এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য প্রকৃত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: বড় কর্পোরেটদের একচেটিয়া সুবিধা দেওয়া বন্ধ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ তৈরি করতে হবে।

১১. সরকারি ও বেসরকারি স্টার্ট-আপ ফান্ডের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ: স্টার্ট-আপ ও ইনোভেশন ফান্ডের বণ্টনে স্বচ্ছতা আনতে স্বাধীন নিরীক্ষা কমিটি গঠন করতে হবে।

১২. আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: আইসিটি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং সরকারি প্রকল্পসমূহের সকল তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ নিশ্চিত করতে হবে।
আমরা আশা করি যে, আপনার দপ্তর আমাদের এই ন্যায্য দাবিগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।


সর্বশেষ সংবাদ