বাণিজ্য মেলা শুরু ১ জানুয়ারি, চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫৫ AM , আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ AM
ঢাকার কুড়িল থেকে ১৪ কিলোমিটা দূরে পূর্বাচল নিউটাউনে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার (ডিআইটিএফ) ২৯তম আসর। মাসব্যাপী এই মেলা শুরু হবে আগামী ১ জানুয়ারি। এখন চলছে সাজসজ্জার শেষ আঁচড়। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে শহীদের সম্মানে যুক্ত হচ্ছে নতুনত্ব। তৈরি হচ্ছে আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধ কর্নার। থাকছে অনলাইনে স্টল-প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ কিংবা টিকিট কাটার সুবিধা। তারুণ্যের চেতনাকে প্রাধান্য দিয়ে সাজানো এবারের আসর হবে আকর্ষণীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ, এমন প্রত্যাশা আয়োজক সংস্থা রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি)।
হাতুড়ি-পেরেকের ঠক ঠক শব্দ, কেউ ছুটছে কাঠ আর বোর্ড নিয়ে, কেউবা দিচ্ছেন রং তুলির আঁচড়, শেষ মুহূর্তের ঝালাই; সব মিলে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মযজ্ঞ। দুই দিন পরই পর্দা উঠবে ২৯তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার।
গত বছর নির্বাচনের কারণে ২০ দিন পিছয়ে শুরু হওয়ায়, প্রস্তুতি কিংবা ব্যবসায় যে ভাটা পড়েছিল, এ বছর তা কাটাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে মেলায় অংশ নিতে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি চলছে। ভেতরের কাজ শেষে প্যাভিলিয়ন বা স্টল সাজানো হচ্ছে।
ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, জুলাই আন্দোলনের চেতনা সামনে রেখে আয়োজন করা হচ্ছে এবারের বাণিজ্য মেলা। মেলায় জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে সামনে রেখে ভিন্ন ভিন্ন নামে তিনটি চত্বর বানানোর কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে ইপিবি কর্তৃপক্ষ। এই তিন অস্থায়ী চত্বরের কাঠামো নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। সব কাজ শেষে এবারের মেলা অপরাপর বছরগুলোর তুলনায় দেশি-বিদেশি দর্শনার্থীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে বলে বিশ্বাস ইপিবি কর্তৃপক্ষের।
আরও পড়ুন: ‘দেশে এখন রিজার্ভ ২০ বিলিয়নের ওপরে’
আয়োজকরা জানিয়েছেন, বাণিজ্য মেলা প্রঙ্গণে এসব চত্বর জাদুঘরের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিভিন্ন ছবি, টিভি স্ক্রিনে বিভিন্ন ভিডিও, গ্রাফিতি, ব্যানার, ফেস্টুন মেলার দর্শনার্থীদের জন্য বিনামূল্যে প্রদর্শন করা হবে। বিশেষ করে বিদেশিদের জুলাই আন্দোলন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা সৃষ্টির লক্ষ্যেই এগুলো করা হচ্ছে। তিন চত্বরের মধ্যে তারুণ্য চত্বরের কাজের অগ্রগতি ভালো।
ইপিবি জানিয়েছে, বাণিজ্য মেলার এবারের আসরে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, ভারত, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক, ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে। সব মিলিয়ে স্টল থাকছে ৩৫০টি। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রফতানির বড় বাজার খোঁজার জন্য কাজ করছে ইপিবি।
মেলায় সার্বিক নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে পুলিশ, র্যাবসহ সেনাবাহিনী। পাশাপাশি থাকবে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া দর্শনার্থীদের ভোগান্তি এড়াতে মেলাকেন্দ্রে বৃহৎ পরিসরে পার্কিং সুবিধা রাখা হচ্ছে। বাণিজ্য মেলার মূল অবকাঠামোর ভেতরে বিভিন্ন প্রসাধনী কোম্পানি, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড ফার্নিচার, দেশি-বিদেশি কাপড়ের দোকান রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের জন্য ইউএসবি সি চার্জারকে কমন স্ট্যান্ডার্ড ঘোষণা করলো ইইউ
গত বছরের মতো এবারও মেলায় প্রবেশমূল্য প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২৫ টাকা। এ বছর সশরীরে টিকিট কেনার পাশাপাশি অনলাইনেও টিকিট ক্রয়ের সুযোগ থাকছে। প্রথমবারের মতো নেওয়া এ উদ্যোগের বিষয়ে ইপিবি জানিয়েছে, এরই মধ্যে ইপিবির ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। ই-টিকিটিং হলে দর্শনার্থীরা মোবাইলে কিউআর কোড দেখিয়ে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। অনলাইনের এ সেবার মাধ্যমে দর্শনার্থীরা যেখান থেকে খুশি অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনতে পারবেন। দর্শনার্থীদের সুবিধার জন্য এবারও থাকছে বিআরটিসির বাস সার্ভিস। কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে মেলা পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই বাসগুলো চলাচল করবে।
দেশি পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাসব্যাপী এ মেলা অনুষ্ঠিত হতো আগারগাওয়ের শেরেবাংলা নগরের মেলার মাঠে। কোভিড মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা করা যায়নি। এরপর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা চলে যায় পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে। ২০২৪ সালে তৃতীয়বারের মতো স্থায়ী ভেন্যু বাংলাদেশ-চীন এক্সিবিশন সেন্টারে বাণিজ্যমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেখানেই এবারের বাণিজ্য মেলার আয়োজন করা হয়েছে।