ট্রাম্পের শুল্কারোপের পর বাংলাদেশের পণ্য কেনা স্থগিত করছেন মার্কিন ক্রেতারা

বাংলাদেশের পণ্য ক্রয় স্থগিত করছেন মার্কিন ক্রেতারা
বাংলাদেশের পণ্য ক্রয় স্থগিত করছেন মার্কিন ক্রেতারা  © ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর

বাংলাদেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ৮০ শতাংশই টেক্সটাইল ও গার্মেন্ট খাতের। গত বছর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ও সরকার পতনের সময় এ খাত বড় ধাক্কা খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক ১৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ করেছে। এরপর থেকে দেশটির ক্রেতারা ক্রয়াদেশ স্থগিত করা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ফ্রান্স টোয়েন্টিফোরের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম তৈরি পোশাক উৎপাদনকারী বাংলাদেশ। এসেনসর ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার প্রডাক্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, তাদের একজন ক্রেতার কাছ পণ্য জাহাজীকরণ বন্ধের অনুরোধের চিঠি পেয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাদের ক্রেতা চামড়াজাত পণ্য জাহাজে পাঠানো বন্ধের অনুরোধ করেছেন। এর মধ্যে ব্যাগ, বেল্ট ও ওয়ালেট রয়েছে, যার মূল্য অন্তত ৩ লাখ ডলার। দীর্ঘদিনের ক্রেতার এ সিদ্ধান্তের কারণে উদ্বেগে আছেন।

প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সাল থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তারা মাসে অন্তত ১ লাখ ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। গত বছর বাংলাদেশ ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে। এর মেধ্যে ৭ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক ছিল।

উইকিটেক্স-বিডির সিইও এ কে এম সাইফুর রহমান বলেছেন, তাদের দেড় লাখ ডলারের পণ্য পাঠানো বন্ধের অনুরোধ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতা। তারা ক্রেতাদের কাছ থেকে অতিরিক্ত খরচ আদায় সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন। ফলে আমাদের পণ্যের দাম কমাতে হবে।

সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন এক চিঠিতে মার্কিন ক্রেতাদের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, অনেক ব্র্যান্ড ও খুচরা বিক্রেতারা বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।

আরো পড়ুন: উচ্চশিক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত ঢাবি ও ইবি ছাত্র-শিক্ষকের

তিনি আরো বলেন, সমস্যা সমাধানে করণীয় নিয়েও আলোচনা করেছেন তারা। পরিস্থিতি বুঝতে পারলেও বিষয়টি সরবরাহকারীদের ওপর চাপিয়ে দিলে তা এ খাতের ওপর প্রভাব ফেলবে। এ সংকটময় সময়ে তাদের ধৈর্য, সহানুভূতি ও সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, কিছু ক্রেতা পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত পণ্য না পাঠাতে বলেছেন। ছোট ক্রেতারা সম্পূর্ণ শুল্ক বহন করতে বা খরচ ভাগ করে নিতে চাপ দিচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কারোপের পর বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস শনিবার জরুরি মিটিং করেছেন। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আরোচনার পর ট্রাম্প প্রশাসনকে এর প্রভাব জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ