ছাত্রলীগ নেতাকে ‘পদ দিতে’ বিতর্ক সংসদের গঠনতন্ত্র পরিবর্তন

মিফতাহুল ইসলাম পান্থ
মিফতাহুল ইসলাম পান্থ  © সংগৃহীত

ছাত্রলীগ নেতাকে ‘পদ দিতে’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ডিবেটিং ক্লাবে (এসএমডিসি) গঠনতন্ত্রের ধারা পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক মিফতাহুল ইসলাম পান্থকে এসএমডিস’র সাধারণ সম্পাদক করতে ক্লাবের সংবিধানের কয়েকটি ধারা পরিবর্তন করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, হল ডিবেটিং ক্লাবের মডারেটর হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের প্রভাষক এ বি এম আশরাফুজ্জামান গঠনতন্ত্রের ধারা পরিবর্তনের উদ্যোগ নেন। ‘কোন রাজনৈতিক দলের পদধারী ব্যক্তি কার্যনির্বাহী পরিষদের কোন পদ গ্রহণ করতে পারবে না’ এমন ধারা পরিবর্তন করা হয়।

জানা যায়, শনিবার (২৭ জুলাই) রাতে প্রাথমিকভাবে কমিটি মনোনীত করেন এসএমডিসি’র মডারেটর ।

এর আগে গত ২৪ জুলাই রাতে এসএমডিসি'র কমিটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সময় সংবিধানের ধারা পরিবর্তন সংক্রান্ত জটিলতায় কমিটি দেওয়া হয় নি। মডারেটর তখন ভোটের মাধ্যমে মতামত নেওয়ার ঘোষণা দেন। এটা শুনে বিচলিত পান্থ তার অনুসারীদের হল গেইটে সমবেত করেন। তিনি তার অনুসারীদেরও ক্লাবের কমিটি গঠনে ভোট দেওয়ার দাবি জানান। কিন্তু ইলেকশন কমিটির (ইসি) সদস্য ছাড়া অন্য কারো ভোট প্রদানের সুযোগ না থাকায় মডারেটর সে দাবি নাকচ করে দিয়ে পান্থসহ তার অনুসারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।

অবস্থা বেগতিক দেখে ক্লাবের সংবিধানের ধারা পরিবর্তনের জন্য ৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করেন মডারেটর। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বাইরে বিভিন্ন কোটায় অন্যদের নেওয়া হয়।

কমিটি নিয়ে শনিবার বৈঠক করেন মডারেটর। এরপর তিনি নিজে পান্থকে সভাপতি এবং জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করতে তার ইচ্ছা পোষণ করেন। সে কমিটিতে থাকা একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সূত্রে জানা যায়, কোনো শিক্ষার্থীকে ক্লাবের নির্বাচন করতে হলে তাকে হলে নিয়মিত হতে হবে এবং রাজনৈতিক কোনো পদ তার থাকা যাবে না।

এসএমডিসি সংবিধানের ৮ (ঘ) ধারায় বলা হয়েছে, "কোনো রাজনৈতিক দলের পদধারী ব্যক্তি কার্যনির্বাহী পরিষদের কোনো পদ গ্রহণ করতে পারবে না"।

সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় কমিটি করে দেন মডারেটর। এর আগে বিকেলে সংবিধানের ধারা পরিবর্তনের জন্য গঠিত কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠকে বসেন তিনি। সেখানে তিনি পান্থকে সভাপতি ও জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করার মত পোষণ করেন। যদিও এর আগে ক্লাবের বর্তমান সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তার কাছে পছন্দের প্রার্থী আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি না-সূচক উত্তর দেন।

শনিবার বিকেলে সংবিধানের ধারা পরিবর্তন নিয়ে কমিটি নিজেদের মধ্যে বিবাদে জড়ায়। এরপর ‘সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে’ হলের আবাসিক নয় এমন তিনজন শিক্ষার্থীকে দিয়ে তিন সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করে দেন মডারেটর এবং তাদেরকে কমিটি প্রদানের বিষয়ে আগের কমিটির সিদ্ধান্তের ওপর হস্তক্ষেপের ক্ষমতা দেওয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেদিন বৈঠকে উপস্থিত ক্লাবের আরেক সদস্য বলেন, আমরা সেদিন উপস্থিত ছিলাম এবং মডারেটর স্যার শুধুমাত্র পান্থ’র জন্য সংবিধানের ধারা পরিবর্তন করেন।

এ বিষয়ে এসএমডিসি’র সভাপতি আব্দুল্লাহ বিন আকিল বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আবার বসব। তাই এ নিয়ে এখনই কিছু বলতে চাচ্ছি না।

এ বিষয়ে এসএমডিসি’র মডারেটর আইন বিভাগের প্রভাষক আশরাফুজ্জামান বলেন, নিয়মের বাইরে কোনোকিছু হবে না। সবকিছু গঠনতান্ত্রিক উপায়ে হবে।


সর্বশেষ সংবাদ