আটকে গেল গর্ভবতী হালিমার অ্যাম্বুলেন্সও
- মোতাহার হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৪:৫৮ PM , আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৮:০০ PM
‘পরীক্ষা করতে পিজিতে আসছিলাম। কিন্তু আন্দোলন চলায় অ্যাম্বুলেন্স আটকে যায়। পায়ে হেঁটেও যেতে পারছি না। তাই অ্যাম্বুলেন্স থেকে নেমে রিক্সা নিয়ে যাচ্ছি।’ গর্ভবতী মহিলা হালিমা বেগম এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে। কিছুটা কষ্টের সঙ্গেই হালিমা বললেন, আন্দোলন করুক, কিন্তু আমাদের মত সাধারণ মানুষের কথাও তো ভাবতে হবে। কারণ, শাহবাগ মোড় আর পিজি হাসাপাতাল তো বেশি দূরে না।
সাত কলেজ অধিভুক্তি বাতিলসহ ৪ দফা দাবিতে শাহবাগ এলাকাসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলায় হালিমার মত অনেকেই বিপাকে পড়েছেন এসব পথ দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে। ভোগান্তিতে পড়েছে অন্যান্য রোগীদের অ্যাম্বুলেন্সও। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আটকিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বিরক্তির কথাও জানিয়েছেন অনেকে।
রোগী সাদেক উল্লাহ বলেন, আমার পায়ে সমস্যা। তাই রিক্সা থেকে নামতে পারছি না। বারডেমে যেতেও পারছি না। প্রচন্ড রোধের মাঝেও আন্দোলনের কারণে জ্যামের মধ্যে বসে থাকতে হচ্ছে।
তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার পর পরেই প্রথমে টিএসসি এলাকায় পরে শাহবাগের সব রাস্তা বন্ধ করে দেওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চার দিক থেকে রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করায় গাড়ি চলাচলে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে গাড়ি চলাচল না করতে পারায় ট্রাফিক জ্যামের সৃষ্টি হয়েছে চারটি লেনেই। আর রাস্তা বন্ধের কারণেই অ্যাম্বুলেন্সসহ রোগীবাহী অন্যান্য যানবাহন জ্যামের ভিতরে আটকে গেছে। ওইসব এলাকায় চিকিৎসা নিতে আসা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও বারডেম হাসপাতালের রোগী এবং তাদের স্বজনরা সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছেন।
আগামী রবিবার থেকে সাত কলেজ অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে লাগাতার আন্দোলন চলবে উল্লেখ করে আন্দোলনের মুখপাত্র শাকিল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আগামী রবিবার থেকে আবারো আন্দোলন শুরু হবে। সাথে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হবে। যতদিন না আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে আমাদের আন্দোলন আমরা চালিয়ে যাব।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই কাজের চাপে তাদের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। নিয়মিত পাঠদান, ফলাফল প্রকাশ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি সেশনজটে পড়তে হচ্ছে।
ঢাবি শিক্ষার্থীদের চার দফাগুলো হলো, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই অধিভুক্ত সাত কলেজ বাতিল করা, দুই মাসের মধ্যে সব পরীক্ষার ফলাফল দেওয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম ডিজিটালাইজেশন করা, ক্যাম্পাসে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং রিকশা ভাড়া নির্ধারণ করা।