টিএসসিকে গুলিস্তান রূপে দেখতে চাই না
- ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০৬:১৬ PM , আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯, ০৬:৪৫ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকাতে মেট্রোরেলের স্টেশন স্থাপনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে জন কোলাহলপূর্ণ স্থানে পরিণত করা হচ্ছে বলে দাবি ছাত্র-ছাত্রীদের। মঙ্গলবার টিএসসি’র রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিভিন্ন স্লোগানের প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।
শিক্ষার্থীদের বহন করা প্ল্যাকার্ডের স্লোগানের মধ্যে রয়েছে- ‘টিএসসিতে মেট্রোরেলের স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা বাতিল কর, করতে হবে’, ‘টিএসসিকে গুলিস্তান রূপে দেখতে চাই না’, শাহবাগে মেট্রোরেলের স্টেশন থাকা সত্ত্বেও টিএসসিতে কেন?’।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সদস্য রকিবুল ইসলাম ঐতিহ্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর দিয়ে মেট্রোরেল যাচ্ছে। এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছিল সেটা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কথা ছিল শাহবাগে একটা স্টেশন হবে এরপর স্টেশন হবে প্রেসক্লাবে। কিন্তু মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে টিএসসি তে স্টেশন করার। মাত্র আধা কিলোমিটার দূরে শাহবাগে স্টেশন থাকা সত্ত্বেও টিএসসি তে স্টেশন কি কারনে দরকার?
তিনি বলেন, মেট্রোরেলে প্রতি ঘন্টায় ৬০ হাজার লোক যাতায়াত করবে। টিএসসি তে যদি স্টেশন হয় তাহলে আশে পাশে নিউমার্কেট, আজিমপুর, বকশিবাজারসহ পুরান ঢাকার অধিকাংশ লোকজন টিএসসি স্টেশন ব্যবহার করবে। ফলে টিএসসি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার চিরচেনা সৌন্দর্য হারাবে। ক্যাম্পাস হবে জনবসতিপূর্ণ একটা বাজার!
ডাকসু সদস্য আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা থেকে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় টিএসসিতে মেট্রোরেলের স্টেশন স্থাপনের প্রতিবাদ জানালাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ রইল টিএসসিতে মেট্রোরেলের স্টেশন স্থাপন যেন না হয় সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। আমাদের টিএসসি যেন সামাজিক, সাংস্কৃতিক উৎসবের মিলনকেন্দ্র হয়ে অবিরাম আলো দিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ ও জাতিকে।
প্রসঙ্গত রাজধানীর যানজট নিরসন ও নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে ২০১২ সালে গৃহীত হয় মেট্রোরেল প্রকল্প। মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) নামে একটি কোম্পানি গঠন করেছে সরকার। এ প্রকল্পের দৈর্ঘ্য হবে উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার। এ এলাকায় বসবাসকারী লাখো নগরবাসী মেট্রোরেল ব্যবহার করে গন্তব্যে যাতায়াত করতে পারবেন। প্রকল্পে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ছয়টি করে কোচ। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে যাত্রী নিয়ে। প্রতি ৪ মিনিট পরপর ১ হাজার ৮০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। ঘণ্টায় চলাচল করবে প্রায় ৬০ হাজার যাত্রী। প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে ৪০ মিনিটের কম।
মেট্রোরেলের প্রস্তাবিত ১৬টি স্টেশন হচ্ছে উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (সেন্টার), উত্তরা (দক্ষিণ), পল্লবী, মিরপুর–১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, সোনারগাঁও হোটেল, জাতীয় জাদুঘর, দোয়েল চত্বর, জাতীয় স্টেডিয়াম ও বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা।