হলে ফিরতে চান নুর-রাশেদ-ফারুকরা
- মোতাহার হোসেন, ঢাবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৭ মার্চ ২০১৯, ১০:২২ PM , আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০৬:১৩ PM
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও ডাকসু নির্বাচন- কিছু বিতর্ক থাকলেও উভয় ক্ষেত্রেই বেশ সফল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। যদিও আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন সংগঠকদের অনেকেই। এদের কেউবা নির্যাতিত হয়েছেন, কাউকে বা ছাড়তে হয়েছে প্রিয় হল। তবে এবার ডাকসু নির্বাচনের পর নুর, রাশেদ, ফারুকরা ফিরতে চাইছেন নিজ নিজ হলে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একচেটিয়া আধিপত্য আবাসিক হলগুলোতে। কিন্তু ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন এবং তাতে কোটা আন্দোলনকারীদের সাফল্যে পরিস্থিতি বদলেছে। তাই হলে ওঠার পরিকল্পনা করছেন ভিপিসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। হল সংসদগুলোও বৈধ শিক্ষার্থীদের জায়গা করে দিতে অবৈধদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিচ্ছে।
তথ্যমতে, গত বছর কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাধারণ ছাত্রদের অধিকার আদায়ে গড়ে ওঠে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংগঠনটি গড়ে ওঠার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে। সংগঠনটি বিস্তার লাভ করা শুরু করলে ছাত্রলীগের বাঁধার মুখে পড়ে। নির্যাতন-হয়রানির একপর্যায়ে হল ত্যাগে বাধ্য হয় কোটা সংস্কার আন্দোলনে সম্পৃক্তদের অনেকে। বৈধ ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও তখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও নিরব ভূমিকায় ছিলো।
গত ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচনের আগে আবসিক হলে না হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান নিশ্চিত হয়। তখন আবাসিক হলে বৈধ ছাত্ররাই থাকবে এবং এজন্য তারা দলীয় রাজনীতি কিংবা মিছিল, গেস্টরুম করতে বাধ্য থাকবে না বলে শিক্ষার্থীদের প্রতিশ্রুতি দেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্রার্থী, বর্তমানে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। কিন্তু নুরসহ সংগঠনটির নেতাকর্মীরা এখনও হলের বাইরে থাকেন।
‘দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসে’র সঙ্গে আলাপকালে নুরুল হক নুর বলেন, তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মহসীন হলের ১১৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। হলে উঠে ওই কক্ষেই থাকতে চান। বৈধ শিক্ষার্থীরা যেন হলে নির্বিঘ্নে থাকতে পারেন সেজন্য প্রশাসনের সাথেও আলোচনা করবো।
নুরসহ বিতাড়িত অন্যান্য ছাত্রদের হলে ওঠার ব্যাপারে জানতে চাইলে হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের প্রোভোস্ট অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘নুর এখনো ছাত্র। চাইলে যে কোনো সময় হলে উঠতে পারে। এ ব্যাপারে দরকার হলে তাকে হল প্রশাসন সহায়তা করা হবে।
এদিকে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান জেলে থাকার সময় তার রুমে তালা লাগিয়ে দেয় ছাত্রলীগ। ফারুক বর্তমানে আজিমপুর এলাকায় থাকেন। তিনি জানান, জেল থেকে বের হয়ে জানতে পারেন তার সকল জিনিসপত্র রুম থেকে বের করে ফেলে দিয়েছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। এরপর আর হলে উঠতে পারেননি তিনি।
এদিকে সংগঠনটির আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানও হল ছাড়তে বাধ্য হন। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগের নানা অপবাদের মুখে হল ছাড়তে বাধ্য হই। প্রশাসন আমাদের সাহায্য না করে উল্টো তাদের (ছাত্রলীগ) পক্ষ নিয়ে আমাদের হল থেকে বের হয়ে যেতে বলে। আমি এখন হলে উঠতে চাই।’
সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ছাত্রত্ব থাকলে সবাই হলে উঠতে পারবে- এটাই নিয়ম। পুরো বিষয়টা যেহেতু হল প্রশাসন তদারকি করে; তারাই এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।