হল সংসদে প্রার্থীদের দায়িত্ব গ্রহণ, আবাসন সঙ্কট সমাধানে প্রাধান্য
- আব্দুল্লাহ তুষার
- প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৭:৫৩ PM , আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৯, ১০:২৯ PM
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল ছাত্র সংসদে নবনির্বাচিত কমিটির প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে ডাকসু ভবনে ডাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানে সভাপতিত্বে ডাকসুর প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়। অন্যদিকে, স্ব স্ব হলের হল ছাত্র সংসদ কক্ষে প্রথম কার্যকারী সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্ব স্ব হল ছাত্র সংসদের সভাপতিরা (হল প্রভোস্ট) সভার সভাপতিত্ব করেন।
জানা গেছে, ডাকসু ও হল ছাত্র সংসদের প্রথম কার্যকারী সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন নবনির্বাচিত নেতারা। এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচন করেছেন। তবে হল সংসদে নাবনির্বাচিত প্রার্থীরা প্রথম কার্যকারী সভায় আবাসন সঙ্কট সমাধানে গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, ঢাবির ১৮টি আবাসিক হল সংসদে ১৩টি পদের মোট ২৩৪ জন নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ১২টিতে জয়ী হয় ছাত্রলীগের প্যানেলের প্রার্থীরা। বাকি হলগুলোর ভিপি, জিএসসহ বেশ কিছু পদে জয়ী হয় স্বতন্ত্ররা। শনিবার সকাল ১১টার দিকে স্ব স্ব হলের সংসদের কক্ষে প্রথম কার্যকারী সভায় তাদের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সভায় দায়িত্ব পেয়ে প্রতিনিধিরা তাদের হলের আবাসন সঙ্কটসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। হলের সংসদের সভাপতিরা (প্রভোস্ট) এসব সমস্যাগুলো সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল সংসদের ভিপি (সহ-সভাপতি) সাইফুল্লাহ আব্বাসী বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরে আমরা হলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দাবি তুলেছি। এরমধ্যে-হলের ক্যান্টিনের খাবারের সমস্যা, হলে বহিরাগত এবং অছাত্রদের অবৈধ অবস্থান, নিরাপদ খাবার পানির জন্য ফিল্টার স্থাপন এবং হলে কুকুর-বিড়ালের উৎপাতের বিষয়ে জানানো হয়। হল প্রাধ্যক্ষ ও হল সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. দেলওয়ার হোসেন এসব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সংসদের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) মেহেদী হাসান শান্ত বলেন, হলের দোকান সংখ্যা বৃদ্ধি এবং দোকানের মান উন্নয়ন, ক্যান্টিনে খাবারের মান উন্নয়ন, সিট সমস্যার সমাধান এবং হল সংসদের বাজেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া, প্রত্যেক সম্পাদক হল সংসদের উন্নয়নে কি কাজ করবেন তা সভায় ব্যক্ত করেছেন।
কবি জসীম উদ্দিন হলের জিএস ইমাম হাসান বলেন, আমাদের ছোট্ট হলে অনেক সমস্যা রয়েছে। তারমধ্যে- ক্যান্টিনের খাবারের সমস্যা এবং বহিরাগতদের অবস্থানের বিষয়ে কথা বলেছি। একই সঙ্গে হল ভবনের তিনতলা থেকে কর্মচারীদের থাকার জায়গা থাকায় হলের ছাত্রদের থাকার সমস্যা হয়। তারা এক রুমে ১০ থেকে ১২জন করে থাকে। এছাড়া, রাত ১২টার পরে হলের সব দোকানপাট বন্ধ হওয়ায় খাওয়ার পাওয়া যায়না। আমরা দুই একটি দোকান রাত ১টা পর্যন্ত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছি। আগামী বৈঠাকে এসব বিষয়ে সমাধান হবে বলে মনে করছি।
কবি জসীম উদ্দিন হল সংসদের সভাপতি (হল প্রভোস্ট) অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ বলেন, প্রতিনিধিদের দাবির বিষয়ে আমরা শুনেছি। তারা হলের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেছেন। তিনি হলে তিনতলায় কর্মচারীদের অবস্থানের বিষয়ে বলেন, সেটা প্রতিনিধিদের লিখিতভাবে দিতে বলেছি। তারা লিখিত দিলে তা সিন্ডিকেট সভায় তোলা হবে। তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন। এটা হলের কোন সিদ্ধান্তের বিষয় না।
অন্যদিকে, মেয়েদের হলগুলোতেও এই সভায় হয় যথাসময়ে। প্রতিনিধিরা তাদের হলের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। জানতে চাইলে কবি সুফিয়া কামাল হলের জিএস মুনিরা শারমিন বলেন, আমরা হলের ক্যান্টিনের বিষয়ে কথা বলেছি। হল প্রাধ্যক্ষ আমাদের আগামী মাসের মধ্যে এই বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এছাড়া, আমরা বলেছি, আমাদের হলের গেইট রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত করতে। কিন্তু হল প্রাধ্যক্ষ এতে রাজি হননি। তিনি জানান, এটা আমাদের বিষয় না। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়। তারা যা সিদ্ধান্ত নিবে তাই। মুনিরা বলেন, আমরা মেয়েদের হলের যেসব প্রতিনিধি আছি সবাই এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। মেয়েদের সব হলগুলোতেই যেন রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় সে বিষয়ে দাবি জানাব।
শামসুন নাহার হলের ভিপি আফরোজা ইমি বলেন, আমরা প্রথম দিনের সভায় দায়িত্ব পেয়েই ক্যান্টিনে উন্নত মানের খাবার, সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে খাবার ব্যবস্থা, জিনিসপত্রের দাম হ্রাস, অভিভাবকদের হলে আসার অনুমতি, আবাসিক-অনাবাসিক সবাই যেন আইডিকার্ড জমা দিয়ে চলাফেরা করতে পারে তার অনুমতি এবং তারা রাতে থাকলে এপলিকেশন করে থাকার ব্যবস্থা, বহিরাগতদের হলে অবস্থান যাতে না করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। এছাড়া এ বিষয়ে আগামীকাল রবিবার প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ, প্রত্যেক রুমের সামনে আবর্জনা ফেলার জন্য ঝুড়ির ব্যবস্থা, ডাইনিং ক্যান্টিনে পলিথিন নিষিদ্ধ করা এবং রিডিংরুম সারারাত খোলা রাখার দাবি জানিয়েছি। প্রশাসন এসব দাবি পূরণের বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছেন।