প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব ছাত্রলীগের, ভিপির না (ভিডিও)

ডাকসুর সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন ভিপি নুরুল হক নুর
ডাকসুর সভা শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছেন ভিপি নুরুল হক নুর  © টিডিসি ফটো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নব-নির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির প্রথম কার্যকরী সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসুর আজীবন সদস্য করার প্রস্তাব উঠেছে। তবে ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি দাবি করে এর বিরোধিতা করেছেন সহ সভাপতি (ভিপি) নুরুল হক নুর। এসময় তিনি পুনরায় ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

ডাকসুর সভায় প্রস্তাবটি উত্থাপন করেছেন ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাহরিমা তানজিনা অর্ণি। আগামী সভায় এটি পাশ হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসুর নতুন কমিটির প্রথম কার্যকরী সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসু সভাপতি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসুর আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ডাকসুর পরবর্তী সভায় এটি পাশ হতে পারে।’

তবে এর বিরোধিতা করা হয়েছে জানিয়ে ভিপি নুরুল হক নুর সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার একটা প্রস্তাব সভায় এসেছে। তবে এর সমাধানে আমরা পৌছায়নি। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ এবং আমি নিজে এ নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক রয়েছে বলে মনে করছি। সে জায়গা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে এখানে সদস্যপদ দেওয়া উচিৎ না বলে আমরা মনে করছি।’

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন সম্মানিত ব্যক্তি। এই বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে যে ডাকসু, সেখানে তার মতো সম্মানিত ব্যক্তিকে সদস্য করা ঠিক হবে না। তার কথার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনও।

এসময় ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘ডাকসুর কমিটির ২৩ জন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আজীবন সদস্য পদ দেওয়ার পক্ষে। সুতরাং এটি পাশ হবে।’

ডাকসুর অভিষেক অনুষ্ঠান বড় আয়োজনের মাধ্যমে করার ব্যাপারেও সভায় আলোচনা হয়েছে। এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে এটি করা হতে পারে বলে ডাকসুর নেতারা জানিয়েছেন। এতে রাষ্ট্রপতি কিংবা প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন।

এর আগে বেলা ১১টার কিছু পর ডাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডাকসুর কার্যকরী সভা শুরু হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাকসুর সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান।

শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডাকসুর জিএস গোলাম রব্বানী। এরপর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এরপর রাব্বানী কেন্দ্রীয় সংসদের সবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় জিএস সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব গ্রহণের অনুমতি নেন। এক বছরের জন্য অনুমতি দেন ভিসি ড. আখতারুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। সে বছর ৬ ডিসেম্বর এরশাদ সরকারের পতনের পর শুধু ডাকসু নয়, কোনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের নির্বাচন হয়নি। গত ১১ মার্চ নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রাণ ফিরে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্র সংসদের।

এই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় পদের ২৩টিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী জয়লাভ করলেও বাকি দুটি পদের মধ্যে ভিপি হিসেবে জয়লাভ করেন কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর এবং সমাজসেবা সম্পাদক হিসেবে জয়লাভ করেন আকতার হোসেন।

এছাড়া ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এবং সহ-সম্পাদক (এজিএস) নির্বাচিত হন ছাত্রলীগের ঢাবি ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এছাড়া হল সংসদে ১৮টি হলের মধ্যে ৯টি হলেই ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল জয়ী হয়।


সর্বশেষ সংবাদ