ফের ডাকসু নির্বাচনের দাবি ভিপি নুরের

  © টিডিসি ফটো

ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপিতে ডাকসু নির্বাচন হওয়ায় ফের নির্বাচন দাবি করে সংবাদ সম্মেলনে ভিপি নুরুলহক নুর বলেন, ১১ মার্চের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। দীর্ঘ ২৮ বছর পর যে নির্বাচন হয়েছে তার মাধ্যমে প্রশাসন কালিমা লেপে দিয়েছে। আমরা বলেছি, পুনঃনির্বাচন দিতে হবে। যারা এই নির্বাচনের সাথে জড়িত তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ফের নির্বাচন দাবি করেছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদ। রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় রাজনীতির মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন ডাকসু’র নবনির্বাচিত ভিপি নুরুলহক নুর।

তিনি বলেন, আমরা কোন কলঙ্কিত নির্বাচন চাই না। স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। যেখানে স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে সকল ছাত্রের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন হবে। কিন্তু আমরা সে ধরনের কোন ফলাফল দেখি নাই। শিক্ষকরাই এই নির্বাচনের কারচুপির সাথে জড়িত। তাই, আমি পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসান বলেন, গত ১১ মার্চ বহুল প্রতিক্ষিত যে ডাকসুর নির্বাচন হয়েছে তাতে সাধারণ ছাত্রদের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলিত হয়নি। নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি মানুষের যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছিল, সেই সংকট থেকে উত্তরনের একটি মাধ্যম হিসাবে ডাকসু নির্বাচনকে রোল মডেল হিসাবে উপস্থাপন করা যেত। কিন্তু ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত হওয়া ডাকসু নির্বাচনে অনিয়ম কারচুপি প্রতীয়মান হয়েছে। মৈত্রী হলে ক্রস দেওয়া ব্যালট, রোকেয়া হলে ট্রাঙ্ক ভর্তি ব্যালট উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি দাবি করে বলেন, বিভিন্ন হলে কৃত্রিম লাইন, সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে ডুকতে না দেওয়াসহ নানাবিধ  সমস্যা হয়েছে। নিরপেক্ষ শিক্ষদের দিয়ে নির্বাচন না দেওয়া, প্রার্থীদের উপর হামলা পর্যন্ত হয়েছে যা একটি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে যথেষ্ট।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের ধারাকে অক্ষুন্ন রাখতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা ও সম্মানকে অক্ষুন্ন রাখতে এই নির্বাচনকে প্রশ্নের উদ্ধে রেখে শিক্ষার্থীদের মতামতের দাবির আলোকে ১১মার্চের এই বিতর্কিত নির্বাচন বাতিল করে ফের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলন থেকে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাধারণ শিক্ষার্থী অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভিপি নুরুল হক নুর, ফারুক হোসেন, রাশেদ খাঁন সহ আরও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ।

এদিকে পাঁচ দফা দাবিতে আগামীকাল সোমবার ক্লাস বর্জন ও উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলো। পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তারা।

দাবিগুলো হলো- ডাকসু নির্বাচন বাতিল, পুনঃতফসিল দেয়া, উপাচার্যের পদত্যাগ, মামলা প্রত্যাহার ও হামলাকারীদের বিচার। নির্বাচন বর্জনকারী প্যানেলগুলোর পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন স্বতন্ত্র জোট থেকে ভিপি প্রার্থী অরণি সেমন্তি খান।

এর আগে, আগামীকালের আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে রবিবার দুপুর ১টায় মধুর ক্যান্টিনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন প্রগতিশীল ছাত্রজোট থেকে ভিপি প্রার্থী লিটন নন্দী। তিনি বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে নির্বাচন হয়েছে, সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একধরনের কলঙ্কজনক অধ্যায় রচিত হয়েছে। আমরা ১১মার্চ নির্বাচনের দিন ৫টি প্যানেল যৌথভাবে এই নির্বাচনকে বর্জন করেছিলাম এবং একইসঙ্গে নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে পুনঃতফসিলের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু গতকালের (শনিবার) নুরুর বক্তব্য সবাইকে হতাশ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ