মাকেসহ মারধর শিক্ষক প্রেমিকের, পরে পাওয়া গেল ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে মিতু আক্তার (২৩) নামে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পাগলা থানা পুলিশ। সোমবার দুপুরে উপজেলার মুখি মধ্যপাড়া গ্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সে এলাকার তাঁরা মিয়ার মেয়ে। মিতু গফরগাঁও সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের বানিজ্য শাখার শিক্ষার্থী ছিল।
পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিতুর সঙ্গে প্রতিবেশী মাদ্রাসাশিক্ষক আব্দুল করিমের প্রেম ছিল। মিতু সোমবার মা শেফালী খাতুনকে নিয়ে তার বাড়িতে যায়। এ সময় বিয়ে করার কথা বললে আব্দুল করিম প্রথমে মিতুকে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় এবং দুজনের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়।
পরে আব্দুল করিম ও তার বাড়ির লোকজন মিতুকে মারধর করে তার মা শেফালী খাতুনসহ তাকে টেনে হেঁচড়ে তাদের বাড়িতে রেখে আসে। এর কিছুক্ষণ পর মিতু আক্তার কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে মফিজ উদ্দিনের পুকুর পাড়ের কড়ই গাছে তার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
লাশ গাছে ঝুলতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
শেফালী খাতুন বলেন, আব্দুল করিমকে বিয়ে করতে বলে মিতু। তবে বিয়ে করবে না জানালে এতদিন প্রেম করেছো কেনো জানতে চায়। মিতুর প্রশ্নের জবাব না দিয়ে সে ও তার বাড়ির লোকজন আমাকেসহ মেয়েকে মারধর করে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। ঘটনা জানাজানি হলে আমার মেয়ে গোপনে বেরিয়ে লজ্জায় আত্মহত্যা করে।
আরো পড়ুন: ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়’ পোস্ট দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা ঢাবি ছাত্রীর
মিতুর ভাই মো. ফাহিম অভিযোগ করেন, আব্দুল করিম বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই বছর ধরে বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বার বার বিয়ের কথা বললেও সে গড়িমসি করে। আমার বোনের আত্মহত্যার প্ররোচনাকারী আব্দুল করিমের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল করিমের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় মশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল মনি বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। আব্দুল করিমের সাথে মিতুর সম্পর্ক ছিলো।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ ও ময়নাতদন্তের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।