চেয়ারে চুইংগাম লাগানোর অপরাধে ২২ ছাত্রকে পিটুনি দিয়ে শিক্ষক বরখাস্ত

ইনসেটে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক চঞ্চল রায়
ইনসেটে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক চঞ্চল রায়  © সংগৃহীত

দিনাজপুরের বীরগঞ্জের একটি স্কুলে পরীক্ষা চলাকালীন শিক্ষকের বসার চেয়ারে চুইংগাম লাগানোর অপরাধে একটি ক্লাসের ২০ থেকে ২২ শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পরে অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে স্কুলে অবস্থান নিলে অভিযুক্ত শিক্ষক স্কুল ছেড়ে পালিয়ে যান। মঙ্গলবার (৭ জুন) এ ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন বলে জানা গেছে।

সোমবার (৬ জুন) এ ঘটনা ঘটে উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বি কে উচ্চ বিদ্যালয়ে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক চঞ্চল রায়। উপজেলার শতগ্রাম ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার চন্দ্রকান্ত রায়ের ছেলে। 

জানা গেছে, উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বি কে উচ্চ বিদ্যালয়ে সোমবার ইংরেজি ১ম পত্র পরীক্ষা চলাকালীন সহকারী শিক্ষক চঞ্চল রায়ের সিটে কেউ চুইংগাম লাগিয়ে দেয়। এ ঘটনায় শিক্ষক চঞ্চল রায় ক্ষিপ্ত হয়ে পরীক্ষা শেষে ক্লাসরুমের দরজা লাগিয়ে নবম ও ষষ্ঠ শ্রেণির ২০-২২ জন ছাত্রকে আটক করে বেধড়ক লাঠিপেটা করে আহত করে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীরা বাইরে গিয়ে অভিভাবকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা বিদ্যালয়ে জড়ো হয়ে ঘটনার কৈফিয়ত চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক চঞ্চল রায় বিদ্যালয় ছেড়ে পালিয়ে যান। 

পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে তাৎক্ষণিক পলাশবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ সিদ্দিকী মানিক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি ডা. পরেশ চন্দ্র রায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। 

মঙ্গলবার সকালে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে গড়েয়া সড়কের পলাশবাড়ী ইউনিয়ন বোর্ড অফিস বাজারের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরবর্তীতে বেলা ১১টায় বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার কন্দর্প নারায়ণ রায় বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ছাত্র ও অভিভাবকদের অভিযোগ শোনেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক করে রেজুলেশনের মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক চঞ্চল রায়কে সাময়িক বরখাস্ত করেন। 

ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র সোহেল রানা, রাব্বি ইসলাম, মিত্র ধর রায় জানায়, আমরা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। কে, কখন স্যারের চেয়ারে চুইংগাম লাগিয়েছে আমরা জানি না। আমরা দেখিনি তাই স্যার জিজ্ঞাসা করলেও কারও নাম বলতে পারিনি। আমরা নির্দোষ এ কথা বলার পরও স্যার আমাদের ইচ্ছেমতো মেরেছেন। আমরা এ রকম শিক্ষক চাই না।

উপজেলা শিক্ষা অফিসার কন্দর্প নারায়ণ রায় বলেন, ঘটনা জানার জন্য চঞ্চল রায়কে ডাকা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় তাঁর অনুপস্থিতিতে সকলের মতের ভিত্তিতে তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ