কারাগারেই মারা গেল ৬ ছাত্র হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি

কারাগারের ফটক
কারাগারের ফটক   © সংগৃহীত

কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে সাভারের আমিনবাজারের আলোচিত ৬ ছাত্র হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নিহরের (৩২) মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, সোমবার হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

মৃত নিহর ওরফে জমসের আলী সাভার থানার আমিনবাজার ইউনিয়নের বড়দেশী পূর্বপাড়া গ্রামের মনসুর আলীর ছেলে। নিহর ৬ ছাত্র হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এ কারাগারে তার হাজতি নং-৫১৯১। ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে এ কারাগারে পাঠানো হয়।

সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, সকালে নিহরের প্রেশার কমে গেলে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এ সময় কারাগারের হাসপাতালে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে নিহতের মরদেহ তার স্ত্রীর নিকটে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান সিনিয়র এ জেল সুপার।

আরও পড়ুন : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ পদে ৩৮ নিয়োগ

জানা যায়, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবে বরাতের রাতে সাত তরুণ আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে কেবলারচর এলাকায় বেড়াতে যায়। তারা সবাই রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ছিলেন। স্থানীয় লোকজন ডাকাত সন্দেহে তাদেরকে গণপিটুনি দেয়। গণপিটুনিতে আলামিন (২২) নামের তরুণ বেঁচে গেলেও বাকি ছয় তরুণ মারা যায়।

তারা হলেন ধানমণ্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ইব্রাহিম খলিল, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তৌহিদুর রহমান পলাশ, উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র কামরুজ্জামান, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের টিপু সুলতান এবং মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের সিতাব জাবীর মুনিব।

এ ঘটনার পর দিন স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী আবদুল মালেক বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলা দায়ের করেন। তদন্তে ডাকাতির মামলাটি মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

পরে ছয় ছাত্রকে হত্যার অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে সাভার থানায় মামলা করে। তদন্তের দায়িত্ব পায় র‍্যাব। তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি ৬০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় র‌্যাব।

আরও পড়ুন : কুয়েটে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে বিশাল নিয়োগ

এ মামলায় ২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা জেলার দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা জজ ইসমত জাহান ১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড দেন। সেই সঙ্গে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং আর ২৫ জনকে খালাস দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাইদ মেম্বার, আবদুল মালেক, আব্দুর রশীদ, জমশের আলী, ইসমাইল হোসেন, মজিবর রহমান, আনোয়ার হোসেন, মীর হোসেন, আলম, রানা, রজ্জব আলী সোহাগ, আবদুল হামিদ ও আসলাম মিয়া।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ফরিদ খান, শাহীন আহম্মেদ, ওয়াসিম, সাত্তার, রাজীব হোসেন, সেলিম, আলমগীর, মোবারক হোসেন, আখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, মনির হোসেন, শাহাদাত হোসেন, টুটুল, মাসুদ, মোখলেছ, তোতন, সাইফুল ও নুর ইসলাম। 


সর্বশেষ সংবাদ