শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ

কিশোরগঞ্জে সংঘর্ষের দৃশ্য
কিশোরগঞ্জে সংঘর্ষের দৃশ্য  © সংগৃহীত

শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকাসহ চট্রগ্রাম, কিশোরগঞ্জ, লক্ষীপুর ও পাবনায় এসব ঘটনা ঘটেছে। এতে বিভিন্ন স্থানে অনেকে আহত হয়েছেন।

শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে চার শিক্ষার্থী আহত হন। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংঘর্ষে জড়ানো একটি পক্ষ সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং অপরপক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। সোমবার ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র প্রথমে দুই গ্রুপের জুনিয়রদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে উভয় গ্রুপ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে বয়স বৃদ্ধির দাবি বাস্তবায়নে উদাসীন সরকার

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় শহীদ মিনারে ফুল দেওয়া নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার সকালে পাকুন্দিয়া সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। পাকুন্দিয়া-কটিয়াদী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সোহরাফ উদ্দিন বলেন, সকাল ১০টায় তার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা কলেজ শহীদ মিনারে ফুল দিতে যায়। এ সময় বর্তমান সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদের সমর্থকরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। ইটপাটকেলের আঘাতে অন্তত দশজন আহত হয়েছে।

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীরা। দফায়-দফায় সংঘর্ষ উভয় দলের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এরমধ্যে উভয়পক্ষের ১৩ নেতাকর্মী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সোমবার সকাল ৯ টা থেকে ১১ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদের সড়কের ডাকবাংলোর সামনে, প্রধান সড়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে

রায়পুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. ফয়সাল বলেন, সকাল ৯ টার দিকে আমরা শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে মিছিল নিয়ে ফেরার পথে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে পেছন দিক থেকে আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১৫ জন কর্মী আহত হয়েছে। আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে পুনরায় তাদের উপর হামলা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ‘সেকেন্ড টাইম’ থাকছে জাবিতে!

মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ালেন পাবনার ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কার নেতৃত্বে প্রথম শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে এই নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়ান তাঁরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১২টার আগেই পৌরসভা নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও পরিষদ, পুলিশ বিভাগ, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান মিনারের পাদদেশে সমাবেত হয়। ১২টা ১ মিনিটে পৌর মেয়রের নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণের জন্য ঘোষণা দেওয়া হলে আপত্তি জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। ক্ষোভে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করা থেকে বিরত থাকেন। এরপর অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের অর্পণ শেষ হলে তারা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার সময় এক ছাত্রলীগ নেতাকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে একই সংগঠনের এক নেত্রীর বিরুদ্ধে। আজ সোমবার একুশের প্রথম প্রহরে এ ঘটনা ঘটে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী বেনজীর হোসেন নিশি। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। অন্যদিকে, আহত ছাত্রলীগ নেতার নাম মো. এহসানুল হক ইয়াসির। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক।বর্তমানে সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগ শীর্ষ পদ প্রত্যাশী তিনি।

 


সর্বশেষ সংবাদ