বহিষ্কৃত ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত ১২৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। আজ সোমবার (৩ ডিসেম্বর) ঢাকার একটি আদালতের বিচারক এই মামলার বিচার কার্যক্রম শুরুর দিন হিসেবে আগামী ৩০ মার্চ ধার্য করেছেন।
২০১৭ সালে ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বহিষ্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৭ জন শিক্ষার্থীও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাদের পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় বহিষ্কার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন- ঢাবির প্রশ্নফাঁস: ১২৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের মধ্যে ১০০ জন বর্তমানে জামিনে মুক্ত আছেন। অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক হাসিবুল হক তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পড়ে শোনালে তারা নিজেদের নিরপরাধ দাবি করেন এবং ন্যায় বিচারের দাবি জানান।
শাহবাগ থানায় পাবলিক পরীক্ষা আইন (অপরাধ) ১৯৮০ অনুযায়ী দায়ের করা এই মামলায় অনুপস্থিত ২৬ জনের বিরুদ্ধেও অভিযোগ গঠন ও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
আরও পড়ুন- প্রশ্নফাঁস: ঢাবি শিক্ষার্থীসহ ৭৮ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
২০১৯ সালের ২৩ জুন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার এবং এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুমন কুমার দাস ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
তদন্ত চলাকালীন সিআইডি ১২৬ জন সন্দেহভাজনের মধ্যে ৪৭ জনকে গ্রেপ্তার করে, যাদের মধ্যে এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে অভিযুক্ত বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) বহিষ্কৃত সহকারী পরিচালক অলিপ কুমার বিশ্বাসও আছেন।
আরও পড়ুন- ভর্তি জালিয়াতদের বহিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাসের দাবি আখতারের
৪৬ জন অভিযুক্ত ইতোমধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিচারকের কাছে বিবৃতি দিয়ে তাদের অপরাধ স্বীকার করে নিয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২টি হলে অভিযান চালিয়ে সিআইডি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক মহিউদ্দিন রানা ও অমর একুশে হল শাখা ছাত্রলীগের থিয়েটার ও বিতর্ক বিষয়ক সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুনকে গ্রেপ্তার করে।
২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এই অভিযান চালানো হয়। ২ জনকেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বহিষ্কার করে।
আরও পড়ুন: প্রশ্নফাঁসে জড়িত ঢাবির ৮৭ শিক্ষার্থীসহ ১২৫ জনের সাজা হচ্ছে
এর আগে, ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ১৫ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস ও কারচুপির অভিযোগে বহিষ্কার করে।
সে সময় চাকরি ও ভর্তি প্রত্যাশীদের বিশেষ শ্রবণ যন্ত্রের (ইয়ার পিস) মাধ্যমে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রশ্নের উত্তরগুলো সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রশ্নফাঁসকারী চক্র মুম্বাই থেকে প্রায় ১০০টি ডিজিটাল যোগাযোগের ডিভাইস সংগ্রহ করে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন।
২০১৭ সালে একই চক্র রাজধানীর ইন্দিরা রোডের একটি ছাপাখানা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের প্রশ্নফাঁস করে।
আরও পড়ুন- প্রশ্নফাঁস: গ্রেফতার পরোয়ানা ছাত্রলীগের ২১ জনের বিরুদ্ধেও (তালিকা)
নাটোর জেলার ক্রীড়া কর্মকর্তা রকিবুল হাসানের নেতৃত্বে এই চক্রের কয়েকজন সদস্য ভর্তি পরীক্ষা শুরুর আগে প্রশ্নফাঁস করতেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ১২৬ জনের মধ্যে ১০৪ জনের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের আওতায় আরও একটি অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। এই মামলাটি বর্তমানে ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালে রয়েছে।