ডেন্টালে ভর্তির নামে প্রতারণা, জবি ছাত্র গ্রেপ্তার
- জবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১১:২১ PM , আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২১, ১১:৪০ PM
ডেন্টালের ভর্তি পরীক্ষায় চান্স পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে প্রতারণার অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) এক ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগ। রবিবার (২৪ অক্টেবার) রাত সাড়ে ৮টায় গেন্ডারিয়া নারিন্দা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া ওই ছাত্রের নাম আবু মুসা আসারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের দুটি ভুয়া পরিচয়পত্র, একাধিক ভুয়া এনআইডি কার্ড ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের প্রবেশপত্রের কপি জব্দ করা হয়।
গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার আশরাফ হোসেন জানান, ভুক্তভোগীর মেয়ে এবার ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তাতে ফল খারাপ হয়। ফল প্রকাশের পর গ্রেপ্তার মুসা আসারীর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। মুসা আসারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে, ভিকটিমের মেয়ের রোল নম্বর নিয়ে তাৎক্ষণিক চেক করে জানায় যে মেয়ের পরীক্ষার রেজাল্ট ভালই হয়েছে।
ভিকটিমের মেয়ে সরকারিভাবে চান্স পেয়েছে, কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে তাকে চান্স না দিয়ে অন্য কাউকে চান্স দেয়া হয়েছে। তিনি যদি মেয়েকে ডেন্টালে চান্স পাওয়াতে চান তাহলে এখন ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। এতো টাকা নাই জানালে মুসা এখন দুই লাখ টাকা দিলে ভর্তির পর বাকিটা দিলেও কাজ হবে বলে জানায়।
ওই কর্মকর্তা বলেন, মুসার কথা বিশ্বাস না করে তখন ভিকটিমের ইমো আইডিতে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সহকারী সচিব নবিউল হাসান সামসুর পরিচয়পত্র পাঠিয়ে দেয়। সে সঙ্গে বিশ্বাসের জন্য মোবাইলে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সঙ্গে ফেক চ্যাটিং স্ক্রিনশট পাঠায়। পরিচয়পত্র দেখে ভুক্তভোগী কিছুটা আশ্বস্ত হলে মুসার সঙ্গে দেখা করে দুই লাখ টাকা দেন।
তিনি জানান, টাকা দেয়ার পরের দিন মুসাকে ফোন দিয়ে রেজাল্টের বিষয়ে জানতে চাইলে জানান, আজকের মধ্যেই উপরের মহলে আরও এক লাখ টাকা দিতে হবে; না দিলে তার মেয়ের রেজাল্ট আগেরটাই থাকবে।
তখন মুসার কথাবার্তায় সন্দেহ হলে প্রতারণার শিকার হয়েছে বুঝতে পারেন। পরে গত শনিবার (২৩ অক্টোবর) যাত্রাবাড়ী থানায় মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবার। মামলাটি তদন্ত ভার দেয়া হয় গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগকে। তারা গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার মুসাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার মুসা এমন বেশ কিছু প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত ও লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায় মুসা।
এ বিষয়ে জবির প্রক্টোর মোস্তফা কামাল বলেন, এই ছেলের পরিবার আমাদের সাথে দুইদিন থেকে যোগাযোগ করছে। আমি বিভিন্ন থানায় কথাও বলেছি। এখন তো তাকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। এখন পুলিশ তাদের তদন্ত চালাবে। আইন অনুযায়ী প্রশাসন তাকে যে শাস্তি দিবে, সেটি গ্রহণ করতে হবে। এতে আমাদের কিছু করার নেই।