ভিকারুননিসা ছাত্রীর আত্মহত্যার ভুয়া সংবাদ প্রচার, থানায় জিডি

থানায় জিডি
থানায় জিডি  © সংগৃহীত

২০১৮ সালে রাজধানীর ভিকারুননিসা স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রির আত্মহত্যার খবরের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির এক ছাত্রীর ছবি জুড়ে দিয়ে তার মৃত্যুর ভুয়া সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। সাইবার হয়রানির শিকার হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন ওই ছাত্রী। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ডেমরা থানায় এই জিডি করা হয় বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দিন একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রচারিত প্রতিবেদন থেকে ওই ছাত্রীর ফুটেজ কেটে নিয়ে সেটি কে বা কারা বিকৃতভাবে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। সেখানে নানা বাজে মন্তব্য করতে থাকে অনেকে। শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালে ভিকারুননিসার ছাত্রী অরিত্রির মৃত্যুর খবরের সঙ্গে তার ছবি জুড়ে দিয়ে  মৃত্যুর ভুয়া সংবাদও প্রচার করা হয়।

এদিকে, ১৪ সেপ্টেম্বর ওই ছাত্রী তার ফেসবুকের নিজের আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে জীবিত আর ভালো আছে বলে জানায়। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, আমি ভিকারুননিসার সেই মেয়েটি যাকে নিয়ে আপনারা দুদিন যাবত মিম/ভিডিও বানিয়ে যাচ্ছেন, প্রথমে সবাইকে ধন্যবাদ আমাকে একটা নিউজ চ্যানেলে দেখানোর পর সেখান থেকে একটা স্ক্রিপ্ট নিয়ে আমাকে এভাবে ভাইরাল করে দেয়ার জন্য। আর হ্যাঁ আমি কোনো দোষ করিনি। আমি জাস্ট কলেজের ফার্স্ট ডের ক্লাস করতে গিয়েছিলাম। আমি কোনো দোষ করিনি আমার কেনো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে হবে?

“একটা ভিডিও দেখছি আমার স্ক্রিপ্টটার (নিউজের) সাথে দুই বছর আগে ভিকারুননিসার ছাত্রী অরিত্রির আত্মহত্যার ভিডিওর সাথে। আমাকে নিয়ে ট্রোল করে মন ভরেনি আপনাদের? আবার দুই বছর আগেরটাকে নিয়েও আপনাদের মজা করা লাগবে? আমাকে এখন মেরেই ফেললেন দেখছি। শুনেন আমি জীবিত আর ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ্। আমার কিছুই হয়নি আমার কিছু হওয়ার কারণও নেই।”

এ প্রসঙ্গে ওই ছাত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, এ ঘটনার পর ফেসবুকের আইডিতে সেকেন্ডে সেকেন্ডে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট ও মেসেজ আসতে শুরু করে। প্রথমে আমি ভয়ে আইডি ডিঅ্যাক্টিভ করে দেই। পরে দেখলাম আমার নামে ফেক অ্যাকাউন্টও খোলা হচ্ছে। এরপর ভাবলাম আমাকে এভাবে লুকিয়ে পড়লে হবে না। তাহলে ওই আইডিগুলোকে আসল ভাববে মানুষ এবং গুজব ছড়াবে বেশি। এজন্যই আমার নিজের আইডি থেকে একটা স্ট্যাটাস দেই।

এই ঘটনার পর পুলিশসহ অনেকের সমর্থন পেয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সাইবার ক্রাইম নিয়ে কাজ করে এমন অনেকে আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। তারা আমাকে মেন্টালি সাপোর্টও দিয়েছেন। এমনকি পুলিশ নিয়ে যে ভুল ধারণা ছিল সেটা ভেঙে গেছে আমার। তারাও অনেক হেল্পফুল।

তিনি যোগ করে বলেন, আমি বলব এইরকম ঘটনা ঘটলে সবার আগে পরিবারকে পাশে দাঁড়াতে হবে। মেয়েটাকে উল্টো দোষ না দিয়ে তাকে আইনি পদক্ষেপ নিতে হেল্প করা এবং মেন্টাল সাপোর্ট দিয়ে পাশে থাকা উচিত। আমরা চুপ থাকলে এ ধরনের মানুষগুলো আরও সুযোগ পাবে।


সর্বশেষ সংবাদ