মামুনুল হক গ্রেফতার হতে পারেন যেকোনো সময়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২১, ০৩:০২ PM , আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২১, ০১:০৯ AM
পল্টন ও সোনারগাঁও থানার একাধিক মামলায় হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে গ্রেফতারে রাতভর একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযান অব্যাহত আছে। যেকোনো সময় মামুনুল হককে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
বুধবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যা থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে মামুনুল হক আটক হয়েছেন। এমন খবরের ভিত্তিতে প্রথমে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগরীর নেতা ফজলুল করিম কাশেমীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ রকম খবর শোনেননি। তাকে (মামুনুল) কেউ আটক বা গ্রেফতার করেনি। মামুনুল কোথায় আছেন জানতে চাইলে কাশেমী বলেন, তার কাছে নেই। তবে এক জায়গায় আছে, বলা যাবে না।
পরে মোহাম্মদপুর এলাকার কর্মরত গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মামুনুল হক এখনো আটক বা গ্রেফতার হননি। বেশ কয়েক জায়গায় অভিযান চালানো হয়েছে। দিবাগত রাত আড়াইটায় তিনি জানান, এখনো অভিযান অব্যাহত আছে। অভিযানে কারা আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ, র্যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত আছেন।
তিনি বলেন, সম্ভাব্য যে কয়টি জায়গায় অভিযান চালানো হবে তার মধ্যেই তাকে (মামুনুল) ধরা সম্ভব হবে। তবে, সেটি রাতে নাকি দিনে তা বলা যাচ্ছে না।
অপর একটি সূত্র জানায়, মোহাম্মদপুর বছিলা ব্রিজ সংলগ্ন জামিয়া আরাবিয়া মাদরাসার সামনে সন্ধ্যা থেকে পুলিশ মোতায়েন ছিল। ওই মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্বে আছেন মামুনুল হক। রাত ১১ টার দিকে পুলিশ সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর রাত ১২ টার দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মামুনুল হককে গ্রেফতার করেছে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে জানতে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার হারুন অর রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মামুনুলকে গ্রেফতার করা হয়নি। যারা বলেছে তারা রং মেসেজ দিয়েছে।
অন্যদিকে, মামুনুল হককে গ্রেফতারের ব্যাপারে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, তারা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন। যে কোনো সময় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
এ ব্যাপারে নাম না প্রকাশ করার শর্তে পল্টন থানার একজন পুলিশ পরিদর্শক বলেন, মামুনুলকে হয়তো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারছে না। প্রথমে কোনো গোয়েন্দা সংস্থা তাকে নিজেদের হেফাজতে নিতে পারে। পরে র্যাব আটক দেখিয়ে থানায় হস্তান্তর করতে পারে। তবে সেটা কখন তা বলা যাচ্ছে না।
সর্বশেষ রাত তিনটায় হেফাজত নেতা ফজলুল করিম বলেন, সরকার নিজস্ব লোকদের দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতারের গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে চায়। হেফাজত চুপ থাকে নাকি গর্জে ওঠে।
তিনি আরও বলেন, মামুনুলকে গ্রেফতার করা হলে তৌহিদী জনতা রাস্তায় নেমে আসবে। বেশ কিছু জায়গায় পুলিশি অভিযান হয়েছে, অবিলম্বে এসব বন্ধ করার আহ্বান জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসে বায়তুল মোকাররম মসজিদের ভেতরে এবং বাইরে নাশকতা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে পল্টন থানায় মামুনুল হকসহ হেফাজতের কয়েকশ নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়াও সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে নারীসহ অবরুদ্ধের ঘটনায় হেফাজতের তাণ্ডবের পর পুলিশের দুইটি এবং এক সাংবাদিকের করা একটি মামলাসহ মোট তিন মামলার আসামি মামুনুল হক। সবগুলো মামলাতেই মামুনুল হককে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।