মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু, ছাত্র-শিক্ষকসহ গ্রেপ্তার ৭
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০২১, ০৭:৫৫ PM , আপডেট: ১২ মার্চ ২০২১, ০৭:৫৫ PM
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ছাব্বির হোসেন (১৪) নামে এক মাদরাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর তিন শিক্ষক ও চার ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১২ মার্চ) ওই ছাত্রের বাবা মামলা দায়েরের পর তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) রাতে রসুলবাগ মাঝিপাড়া রওজাতুল উলম মাদ্রাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে শুক্রবার (১২ মার্চ) নিহতের বাবা বাদী হয়ে মামলা করলে দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ।
নিহত ছাব্বির হোসেন রূপগঞ্জ থানার বরপা এলাকার মো. জামাল হোসেনের ছেলে। সে সিদ্ধিরগঞ্জের রওজাতুল উলুম মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।
গ্রেফতাররা হলেন- মাদ্রাসার শিক্ষক চাঁদপুর জেলার মতলব দক্ষিণ থানার মধুপুর এলাকার নূরুল ইসলাম মিয়াজির ছেলে শামীম, ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর থানার ইমাদপুর এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে মাহমুদুল হাসান, ঢাকার গেন্ডারিয়া থানার শাখারিনগর এলাকার মোজাম্মেল হকের ছেলে আবু তালহা, মাদ্রাসার ছাত্র নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার উত্তর লক্ষণখোলা এলাকার আবুল কালামের ছেলে আবু বক্কর, ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার কাজা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে শওকত হোসেন সুমন, একই জেলার ফুলপুর থানার ইমাদপুর গ্রামের মৃত আলাউদ্দিনের ছেলে জুবায়ের আহমেদ ও চাঁদাপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার ভাটিরগাঁও গ্রামের মৃত তমসির মিয়ার ছেলে আাব্দুল আজিজ।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ছাব্বির ওই মাদ্রাসায় আবাসিকভাবে থেকে হিফজ বিভাগে পড়ত। গত ১০ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শিক্ষক যুবায়ের জামাল হোসেনের মোবাইলে ফোন দিয়ে জানান, ছাদে ওঠার সিঁড়ি সংলগ্ন ফাঁকা রডের সঙ্গে গলায় গামছা পেঁচিয়ে সাব্বির আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে নিহতের বাবা মাদ্রাসায় গিয়ে অন্যান্য ছাত্র ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে লাশ বাড়িতে নিয়ে দাফনের প্রস্তুতি নেয়। লাশের গোসল করানোর সময় ঠোঁটে, কপালে ও মাথার ডানদিকে আঘাতের চিহ্নসহ গালায় রশির দাগ দেখা যায়।
তখন সন্দেহ হলে বিষয়টি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে মাদ্রাসা থেকে অজ্ঞাতনামা হুজুর নিহতের বাবার মোবাইলে কল দিয়া ছেলের মৃত্যুর বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর জন্য বিভিন্নভাবে বুঝ-পরামর্শ দেয়।
ভিকটিমের অভিভাবকরা নিশ্চিত হন এটা হত্যা। মাদ্রাসার শিক্ষক বা সহযোগীদের আঘাতে মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসাবে চালানোর জন্য লাশ গামছা দিয়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে প্রচার করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
পরে নিহতের বাবা জামাল হোসেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা-পুলিশকে ঘটনা জানালে রাতে পুলিশ ওই সাতজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান বলেন, তিন শিক্ষকের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।