স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রীর আত্মহত্যা: ধর্ষণে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২০, ০৭:০১ PM , আপডেট: ২৩ আগস্ট ২০২০, ০৭:০১ PM
কিশোরগঞ্জ পাকুন্দিয়া উপজেলার ষাইটকাহন গ্রামে মাশফি সুমাইয়া নামের এক শিক্ষার্থী এক শিক্ষকের দ্বারা তিন বছর ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
রোববার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সুমাইয়ার বাবা মো. শামীম মিয়া বাদী হয়ে পাকুন্দিয়া থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল আহমেদকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাকুন্দিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শ্যামল মিয়া বলেন, সুমাইয়ার বাবা শামীম মিয়া বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রাসেল আহমেদকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামি রাসেল পলাতক রয়েছে। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে ওই শিক্ষক ঘটনার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। রাসেল কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি কলেজে প্রভাষক হিসেবে কর্মরত।
এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় ওই বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন গণিতের এক শিক্ষক রাসেল আহমেদের কাছে প্রাইভেট পড়তো সুমাইয়া। রাসেল আহমেদ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নোয়াবাদ গ্রামের রহমত আলীর ছেলে। প্রাইভেট পড়ার সময় ওই শিক্ষকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে সুমাইয়ার। বিয়ের প্রতিশ্রুতি পাওয়ায় এক পর্যায়ে দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। কিছুদিন আগে রাসেল গোপনে অন্য মেয়েকে বিয়ে করেন।
এমন খবর জানতে পেরে হতাশায় ভুগতে থাকে সুমাইয়া। একপর্যায়ে সইতে না পেরে শনিবার সকাল ৭টার দিকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
আত্মহত্যা করার আগে সুমাইয়ার লেখা আট লাইনের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস উদ্ধার করে পুলিশ। এতে তিনি লিখেছেন, ‘বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিন বছর ধরে ছাত্রীকে ধর্ষণের পরে অন্য মেয়েকে বিয়ে করে ছাত্রীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করে আমার প্রিয় শিক্ষক। আর সেই ভাগ্যবান ছাত্রী আমি নিজে। আল্লাহ আমায় মাফ করো।’
সুমাইয়া আরও লিখেছে, ‘দেশে এমন শিক্ষক আর কোন ছাত্রীর জীবনে না আসুক। সবাই আমায় মাফ করবেন, সদ্য এসএসসি পাস করা একটা মেয়ে বিয়ের মানে-এসব জানতামই না। ভদ্র স্যারকে বিশ্বাস করতাম, যা বলতো তাই শোনতাম। যাই হোক, ভাল থাক সে....বিদায়’।