টেকনাফ থানার ওসি ও কুড়িগ্রামের ডিসি
- মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন
- প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২০, ০১:৩৪ PM , আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২০, ০১:৩৪ PM
বাম পাশের ছেলেটির নাম নুর হোসেন। ছেলেটির বাসা টেকনাফে। সে মাদ্রাসায় পড়ুয়া একজন শিক্ষার্থী। আর ডান পাশের সাংবাদিকের নাম আরিফুল ইসলাম। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোছা. সুলতানা পারভীন রাতের অন্ধকারে ডিসি অফিসে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে জেলে পাঠিয়েছে সাংবাদিক আরিফুলকে।
নুর হোসেন ও আরিফুল ইসলামের মধ্যে মিল আছে। দুজনকেই মাদক মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে। আবরার হত্যার পরে নুর হোসেন ফেসবুকে কিছু লেখালেখি করেছিলো। সেই লেখালেখির কারণে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাস তাকে ধরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে থানায় ৫ দিন আটকে রেখে নির্যাতন করে। পরবর্তীতে আমি ওসির সাথে কয়েকবার কথা বলি। কিন্তু ওসি নুর হোসেনকে আটক করার বিষয়টি অস্বীকার করে।
এরপর অন্য একটা নাম্বার থেকে কল করি। তখন তিনি মেবি থানায় বসে ঝিমাচ্ছিলেন। ঝিমানোর মধ্যে তিনি নুর হোসেনকে আটক করার বিষয়টি স্বীকার করে এবং তাকে কোর্টে পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলে। ওসি প্রদীপ কুমার যেভাবে কথা বলেছিলেন, তার সম্পূর্ণ ডকুমেন্টস আমার কাছে আছে।
নুর হোসেনকে আটকের পর ৫০০ ইয়াবার মামলা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। আমি ওসিকে বারবার বলি সে একজন শিক্ষার্থী, তাকে আপনি কেন মিথ্যা মামলা দিলেন? সে বলে এটি আদালত প্রমাণ করবে। ওসির সাথে আমার যে কথোপকথন রেকর্ড আছে তা শুনলেই বুঝবেন যে একজন অসহায় ছেলেকে মিথ্যা মামলা দিয়ে তার জীবনটা কিভাবে নষ্ট করা হয়েছে।
আজ পাঁচ মাস ধরে ছেলেটি জেলে। লেখাপড়া না জানা পরিবারটি ইতোমধ্যে অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছে। উকিলের কাছে গেলেই পকেট ভর্তি টাকা দিয়ে আসতে হয়। হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে দিবে ইত্যাদি কথা বলে বারবার টাকা নিচ্ছে, কিন্তু মিলছে না জামিন। ছেলেটিকে যখন আটক করে তখন তার ফাইনাল পরীক্ষা ছিলো, সেটি দিতে পারেনি। সামনে নাকি আবার তার পরীক্ষা, এটাও হয়তো দিতে পারবে না।
আজকে তার মা, বড় বোন ও ভাইয়ের সাথে কথা বলে নিজেকে অপরাধী মনে হলো। নুর হোসেনকে নিয়ে আজকে এই ঘটনা লেখার সময়ও তার মা কোর্টে উকিলের চেম্বারে বসে আছে আর আহাজারি করতেছে।
এই ঘটনা নিয়ে অনেক লেখালেখি করে ও থানার সাংবাদিকদের জানিয়েও কিছু হয়নি। ঘটনা নিয়ে স্থানীয় কোন সাংবাদিক নিউজ করেনি। আমি স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে বারবার কথা বলেছি। কেন নিউজ করেনি তার জীবন্ত প্রমাণ কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম।
এভাবে হাজার হাজার নুর হোসেন, আরিফুল ইসলামকে প্রশাসনের রোষানলে পড়তে হয়।
স্বাধীন বাংলাদেশে এই কি ছিলো চাওয়া?