অধ্যক্ষকে পুকুরে ফেলা সেই ৪ জনের ছাত্রত্ব বাতিল

  © ফাইল ফটো

রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রিন্সিপাল ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে পুকুরের পানিতে ফেলে দেয়ার অভিযোগে ১৬ ছাত্রকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। এঘটনায় ৪ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর ছাত্রত্ব বাতিল করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়াও পাঁচজনের সনদও আটকে দেয়া হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি সাতজনকে অন্যত্র বদলি করে দেয়া হবে।

যাদের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়েছে তারা হলেন, ছাত্রলীগের পলিটেকনিক শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (পরে বহিষ্কৃত) ২০১৫-১৬ সেশনের কম্পিউটার বিভাগের অষ্টম পর্বের শিক্ষার্থী কামাল হোসেন ওরফে সৌরভ, একই সেশনের ইলেকট্র মেডিকেল বিভাগের সপ্তম পর্বের শিক্ষার্থী রায়হানুল ইসলাম, ২০১৭-২০১৮ সেশনের ইলেকট্রনিক্স বিভাগের পঞ্চম পর্বের মুরাদ হোসেন এবং ২০১৮-২০১৯ সেশনের মেকানিক্যাল বিভাগের তৃতীয় পর্বের শিক্ষার্থী সজিব ইসলাম।

যাদের সনদ আটক রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে তারা হলেন, ২০১৫-২০১৬ সেশনের ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের কৌশিক জামান ওরফে বনি, ইলেকট্রো-মেডিকেল বিভাগের সালমান রহমান ওরফে টনি, পাওয়ার বিভাগের সাব্বির অহম্মেদ, মেকাট্রনিক্স বিভাগের হাসিবুল হাসান এবং কম্পিউটার বিভাগের মারুফ হোসেন।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সুপারিশে জড়িত ১৬ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর শাস্তির সুপারিশ গত মাসে বাংলাদেশ কারিগরি বোর্ডে পাঠানো হয়েছিল।

জানা যায়, কারিগরি বোর্ডের গত ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিউটির তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করা হয়। সভায় একাডেমিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০১০ ও ২০১৬ প্রবিধানের নিবন্ধনের ৩.২ ধারা অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়।

রাজশাহী পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন জানান, গত বুধবার কারিগরি বোর্ডের সিদ্ধান্ত হাতে পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার নিজেদের সভায় সম্মতিক্রমে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ও সনদ আটকের সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে। এছাড়া চলমান পরীক্ষার বিষয়টি বিবেচনা করে ১ ফেব্রয়ারি থেকে অন্যদের বদলির আদেশ কার্যকর হবে। তবে গতকাল সভার শেষে তাদের টিসিতে ইস্যু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, রাজশাহী পলিটেকনিকের মিডটার্মে অকৃতকার্য ও ক্লাসে অনুপস্থিত দুই শিক্ষার্থীকে চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে অধ্যক্ষকে চাপ দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। অধ্যক্ষ অপরাগতা প্রকাশ করলে গত ২ নভেম্বর নিজ অধ্যক্ষের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়। ওই দিন দুপুরে নামাজ শেষে অফিসে ফেরার পথে অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের পুকুরের গভীর পানিতে ফেলে দেয় ওই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে থানায় মামলা করেন অধ্যক্ষ। এতে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও অর্ধশত জনকে আসামি করা হয়। অধ্যক্ষের মামলায় মূলহোতাসহ ১৮ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এছাড়া ইনস্টিটিউট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।


সর্বশেষ সংবাদ