নুসরাত হত্যায় মাদরাসা কমিটির গাফিলতি পায়নি তদন্তকারীরা

  © ফাইল ফটো

ফেনীল সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রে আগুনে পুড়িয়ে মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় সোনাগাজী মাদরাসা কমিটির দায়িত্বে কোনো অবহেলা পায়নি তদন্ত কমিটি। নুসরাত হত্যা মামলার তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত) হাবিবুর রহমান হাইকোর্টে এমন প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশনা মোতাবেক নুসরাতের ঘটনায় মাদ্রাসা কমিটির অবহেলা তদন্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত কমিটি গত ৭ আগস্ট সোনাগাজী গিয়ে তদন্ত করে।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার জানিয়েছেন, এ বিষয়ে আজ শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আদালতে তদন্ত প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে।

গত ৬ এপ্রিল আলিম পরীক্ষা চলাকালে মাদ্রাসার একটি ভবনের ছাদে ডেকে নিয়ে রাফির গায়ে আগুন দিলে তা শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে ১০ এপ্রিল মারা যায় রাফি। এ ঘটনায় ৮ এপ্রিল তার ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান অধ্যক্ষ সিরাজকে প্রধান আসামি করে ৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

এর আগে গত ২৬ মার্চ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলা তার অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানি করেন। রাফি এর প্রতিবাদ করে। পরে তার মা শিরীন আক্তার মামলা করলে পুলিশ অধ্যক্ষ সিরাজউদ্দৌলাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায়। ওই মামলা প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দেয়া হচ্ছিল নুসরাত ও তার পরিবারকে।

পরে সিরাজউদ্দৌলাসহ ১৬ জনের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রাণদণ্ডের সুপারিশ করে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দেয় তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার বহিষ্কৃত অধ্যক্ষ সিরাজকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

বাকি আসামিদের মধ্যে রয়েছেন হলেন- সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রুহুল আমিন (৫৫), সোনাগাজী পৌরসভার কাউন্সিলর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাকসুদ আলম (৫০), নুর উদ্দিন (২০), শাহাদাত হোসেন শামীম (২০), সাইফুর রহমান মোহাম্মদ জোবায়ের (২১), জাবেদ হোসেন (১৯), হাফেজ আবদুল কাদের (২৫), আফছার উদ্দিন (৩৩), কামরুন নাহার মণি (১৯), উম্মে সুলতানা পপি (১৯), আবদুর রহিম শরীফ (২০), ইফতেখার উদ্দিন রানা (২২), ইমরান হোসেন মামুন (২২), মোহাম্মদ শমীম (২০) ও মহিউদ্দিন শাকিল (২০)।

এ মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন শামীম, উম্মে সুলতানা পপি, কামরুন নাহার মনি, জাবেদ হোসেন, আবদুর রহিম ওরফে শরীফ, হাফেজ আবদুল কাদের ও জোবায়ের আহমেদ, এমরান হোসেন মামুন, ইফতেখার হোসেন রানা ও মহিউদ্দিন শাকিল আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।


সর্বশেষ সংবাদ