কক্ষে নারী থাকলে লাল বাতি, না থাকলে সবুজ

  © টিডিসি ফটো

জামালপুরের ডিসির রুমে লাল-সবুজ বাতির রহস্যের জট খুলতে শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ডিসির রুমে আগে যাওয়ার জন্য দুইটি রাস্তা ছিল। তিনি এসে একটি রাস্তা বন্ধ করে দেন। দরজার উপরে লাল এবং সবুজ বাতি লাগিয়ে দেন। নারী নিয়ে ওই বিশ্রাম কক্ষে প্রবেশের সময় তিনি লাল বাতি জ্বালিয়ে দিতেন। পিয়নকে আগে থেকে বলা থাকতো, সবুজ বাতি না জ্বলা পর্যন্ত কাউকে যেন ভেতরে ঢুকতে দেওয়া না হয়।

ওই কর্মচারীরা জানান, রুমটিতে আগে টেবিল-চেয়ার ছিল। আগের ডিসিরা সেখানে বিশেষ মিটিং করতেন। ডিসি আহমেদ কবীর ২০১৭ সালের ২৭ মে যোগদানের পর ওই রুম থেকে টেবিল-চেয়ার সরিয়ে সেখানে খাট বসান। বলা হয়, রুমে তিনি বিশ্রাম নেবেন।

এদিকে ডিসি আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও গত বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিভিন্ন গণমাধ্যম খবর প্রকাশ হয়। ডিসিকে তার অফিস সহায়ক এক নারীর সঙ্গে আপত্তিকরভাবে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে জামালপুর জেলাবাসীসহ সারা দেশের মানুষের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়। নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে যায়।

এরপর আজ রবিবার (২৫ আগস্ট) তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে আদেশ জারি করে একই দিনে তদস্থলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর একান্ত সচিব (উপসচিব) মোহাম্মদ এনামুল হক জামালপুরের নতুন ডিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

রবিবার সকালে স্থানীয় মিডিয়া কর্মীরা জানতে পারেন, ২৪ আগস্ট গভীর রাতে সাবেক জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীর গোপনে জামালপুর থেকে চলে গেছেন।

জামালপুরের নারী নেত্রী এডভোকেট শামীম আরা বলেন, জেলার শীর্ষ একজন সরকারি কর্মকর্তার কাছে নানা সমস্যা নিয়ে নারীরা যান। নিরাপত্তাও চান তার কাছে। কিন্তু রক্ষক যদি ভক্ষকের ভূমিকা পালন করেন তাহলে নারীরা কোথায় নিরাপদ? তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

জামালপুরের মানবাধিকার কর্মী জাহাঙ্গীর সেলিম বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। এ ঘটনায় জামালপুরের নারীরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। তিনি তদন্ত সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ