আমার বিরুদ্ধে লিখে রিফাতের হত্যাকারীদের রক্ষার চেষ্টা চলছে: মিন্নি

  © ফাইল ফটো

বরগুনায় প্রকাশ্য কুপিয়ে রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনায় হত্যাকারীদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। তাকে বাঁচানোর শত চেষ্টা করেও সফল হননি মিন্নি। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া চলছে। অনেকে রিফাতের স্ত্রীর সঙ্গে অভিযুক্ত ঘাতক নয়ন বন্ডের সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। শনিবার রাত ৮টার দিকে বরগুনা পৌর শহরের মাইঠা এলাকায় নিজ বাসভবনে গণমাধ্যমকে এর তীব্র প্রতিবাদ জানান তিনি।

সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিন্নি বলেছেন, ‘ফেসবুকে তার বিরুদ্ধে লিখে ঘাতকদের বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।’ তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে আমাকে নিয়ে বিভিন্ন লেখালেখি হচ্ছে। এসব যারা করছেন, তারা সন্ত্রাসীদের বাঁচানোর জন্য আমাকে নিয়ে আজেবাজে মন্তব্য করছেন। এই হত্যাকাণ্ডকে সমর্থন করে এরাও খুনের সঙ্গে জড়িত। প্রধানমন্ত্রী ও দেশের মানুষের কাছে আমার একটিই দাবি, তাদের যেন শাস্তি দেয়া হয়।’

রিফাতকে ভালোবেসে বিয়ে করেছেন জানিয়ে মিন্নি বলেন, ‘আমাদের বিয়ের বয়স দুই মাস। কিন্তু দুই-তিন বছর আমাদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক ছিল। আমরা একজন-আরেকজনকে ভালোবাসতাম। বিষয়টি আমাদের পরিবারকে জানালে দুই মাস আগে আমাদের আনুষ্ঠানিক বিয়ে হয়। আমার স্বামীকে সন্ত্রাসীরা চোখের সামনে কুপিয়ে হত্যা করল।’

নয়ন দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে জানিয়ে মিন্নি বলেন, ‘আমি তো আগেই বলেছি- বিয়ের আগে ও পরে নয়ন আমাকে রাস্তাঘাটে বিরক্ত করত। জোর করে আমার রিকশায় ওঠত। আমার সঙ্গে ছবি তুলত।’ এসব জেনেও যারা রিফাত হত্যায় নয়ন-মিন্নির কথিত সম্পর্ককে দায়ী করছেন, সেসব ফেসবুক স্ট্যাটাসকারীদের উদ্দেশ্যে স্বামীহারা এই গৃহবধূ বলেন, ‘ভাই, আপনারা এসব বাদ দিয়ে একটু খুনিদের ধরতে সহযোগিতা করুন।’

তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা সাংবাদিকদের জানানোর কথা ছিল। কিন্তু অসুস্থতার কারণে আমি প্রেসক্লাবে গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করতে পারিনি।’ নৃশংস এই হত্যকাণ্ডে জড়িত সবার ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

রিফাত শরীফ গত বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে তাঁর স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকাকে বরগুনা সরকারি কলেজে নিয়ে যান। কলেজ থেকে ফেরার পথে মূল ফটকে নয়ন, রিফাত ফরাজীসহ আরো দুই যুবক রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিফাত শরিফকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।

রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা দৃর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। তাঁরা রিফাত শরীফকে উপর্যুপরি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। বরগুনার কলেজ সড়কের ক্যলিক্স কিন্ডার গার্টেনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে মূল আসামি নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।


সর্বশেষ সংবাদ