০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:৩১

মিঠাপুকুরে ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

শাহাদত হোসেন  © টিডিসি

রংপুরের মিঠাপুকুরে এক ইউনিয়ন সচিবের বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়াসহ নানা দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিঠাপুকুরের পায়রাবন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন। অভিযুক্ত সচিব শাহাদত হোসেন উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন। তার বিরুদ্ধে গত ৩০ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা প্রশাসক এবং দূর্নীতি দমন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী আখেরুজ্জামান।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের সদরপুর গ্রামের আখেরুজ্জামান তার ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন‍্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর ইউনিয়ন পরিষদে একটি ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য যান। সেখানে দায়িত্বরত সচিব মোঃ শাহাদত হোসেন লাইসেন্স নবায়নের জন্য অতিরিক্ত ফি বাবদ তার কাছে তিন হাজার টাকা দাবি করেন এবং নানাভাবে হয়রানি করেন। পরে সচিব শাহাদত হোসেনের ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে ১৪৮৭/- টাকা খরচসহ পাঠাতে বলেন। গত বছরে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের ফি ছিল ৩৩০ টাকা। কিন্তু চলতি বছরে ১৪৬০ টাকা ফি নেয়া কতটুকু যুক্তিসংগত প্রশ্ন করিলে শাহাদাত হোসেন কোন উত্তর না দিয়ে আখেরুজ্জামানকে  তড়িঘড়ি করে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেন।

নাম প্রকাশ‍্যে অনিচ্ছুক পায়রাবন্দ ইউনিয়নের কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এই শাহাদত হোসেন মানেই দূর্নীতির আখড়া। তার বাবার কিছুই ছিলো না। সেই সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দাদা/নানা বানিয়ে সচিব পদে চাকরি নিয়েছেন। এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন শাহাদাত। প্রতি বছরেই জমি কিনছেন সে। গড়েছেন আলিশান বাড়ি। যদি দূর্নীতি না করতো তাহলে অল্প সময়ের মধ‍্যে এতকিছু করা সম্ভব হতো না।

আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক: ১৭৮ শিক্ষার্থীর ভাগ্যে কি পদক জুটবে না?

ভুক্তভোগী আখেরুজামান বলেন, সচিব শাহাদত হোসেন আমার কাছে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন‍্য ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। পরে তার ব‍্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ১৪শত ৮৭টাকা খরচসহ পাঠাতে বলেন। আমি টাকা পাঠিয়ে দেই। এই ইউনিয়ন পরিষদে এরকম ঘটনায় প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে এবং এর ফলে জনগণের চমর ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে।

অভিযুক্ত পায়রাবন্দ ইউপি সচিব শাহাদাত হোসেন জানান, এই অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ‍্যা। সেদিন ফি আদায়ের সময় তার কাছে ক্যাশ না থাকায় বিকাশে টাকা পে করেছে। নিয়ম অনুযায়ী তার নির্ধারিত ফি এর চেয়ে এক হাজার টাকা কম আদায় করা হয়েছে অনুরোধের প্রেক্ষিতে। তারপরেও আমার বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ দিয়েছে, বুঝতেছি নাহ।

এবিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন জানান, দুইটি রশিদের মাধ্যমে ট্রেড লাইন্সের জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনুযায়ী পরিষদের উন্নয়ন খাত ও ভ্যাট ট্যাক্স খাতে ফি জমা হয়। যদি ওই টাকার রশিদ না দিতো তাহলে অনিয়মের তালিকায় পড়ে। যদি ওই ট্রেড লাইন্সের টাকা পরিষদের একাউন্টে জমা দিয়ে থাকে তাহলে কোন অনিয়ম হয়নি। অভিযোগকারী আমার কাছে আসলে তাৎক্ষণিকভাবে এবিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।তারপরেও যদি আমার পরিষদে কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে অভিযোগকারী আসলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দূর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত রংপুর জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক শাওন মিয়া জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।